অনার কিলিংয়ের শিকার এক ফিলিস্তিনি তরুণী
৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ইসরা ঘ্রায়েব নামে ২১ বছর বয়সি ঐ তরুণী গতমাসের ২২ তারিখ মারা যান৷ ছবিতে থাকা পুরুষটি সম্প্রতি ইসরাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে জানা যায়৷
ইন্সটাগ্রামে ছবি প্রকাশ করায় ইসরার পরিবার তাঁর ভাইকে ইসরাকে শাস্তি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল৷
ভাই তাঁকে মারতে থাকলে এক পর্যায়ে ইসরা শাস্তি থেকে বাঁচতে গিয়ে তিন তলার বাসার ব্যালকনি থেকে নীচে পড়ে যান৷ এতে তাঁর মেরুদণ্ড ভেঙে যায় বলে গণমাধ্যমের খবর প্রকাশিত হয়৷
হাসপাতালে থাকা অবস্থায়ও ইসরা একের পর এক পোস্ট দিয়ে যান৷ প্রথমে আহত অবস্থার ছবি পোস্ট করে ইসরা লিখেছিলেন, ‘‘আমি শক্ত আছি এবং আমার বাঁচার ইচ্ছা আছে৷ যদি এই ইচ্ছাশক্তি না থাকতো তাহলে আমি গতকালই মরে যেতাম৷''
এরপর আরেক পোস্ট ইসরা লিখেছিলেন, ‘‘আমাকে শক্ত থাকার পরামর্শ দিয়ে মেসেজ পাঠাবেন না৷ আমি শক্ত আছি৷ আমাকে যারা মেরেছেন আল্লাহ তাদের বিচার করবেন৷''
এসব পোস্ট প্রকাশিত হওয়ার পর ইসরার ভাই আরও কয়েকজন পুরুষ আত্মীয়কে নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে ইসরাকে আবারও মারধর করেন৷
ইসরার পরিবার দাবি করছে, তারা ইসরার মৃত্যুর জন্য দায়ী নন৷ ইসরা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে দাবি করছেন তারা৷
ফিলিস্তিনের পুলিশ এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি৷
প্রতিক্রিয়া
অনার কিলিং নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি করছেন ফিলিস্তিনের তথ্যচিত্র নির্মাতা ইমতিয়াজ আল-মাঘরাবি৷ তিনি বলেন, ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক সময়ে অনার কিলিং সংক্রান্ত আইনকানুন আধুনিক করেছে৷ তবে সেসব আইনের কার্যকারিতা সীমিত৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রথা, ঐতিহ্য আর ধর্ম দিয়ে ফিলিস্তিনি সমাজ প্রভাবিত হয়৷ সেখানে আইনের চেয়ে এসবের মূল্য বেশি৷'' এছাড়া সম্মান রক্ষার্থে অপরাধ করা ব্যক্তিরা অনেক সময় অল্প শাস্তি পেয়ে পার পেয়ে যান৷
রামাল্লাহ সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস স্টাডিজের সমাজবিজ্ঞানী আয়াদ বারঘুতি মনে করছেন, ফিলিস্তিনি সমাজের কারণে অনার কিলিংয়ের ঘটনা ঘটতেই থাকবে৷
এদিকে ইসরার মৃত্যুতে বার্লিনে একদল ফিলিস্তিনি বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন৷
কেয়ার্স্টেন ক্নিপ, দিনা এলবাসনালি/জেডএইচ