‘জঙ্গল' ছাড়তে হবে শরণার্থীদের?
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ক্যালের বহুল আলোচিত শরণার্থী শিবির স্থানীয় ফরাসি নাগরিক এবং সংবাদমাধ্যমের কাছে অবশ্য ‘দ্য জাঙ্গল' নামেই পরিচিত৷ এমন নামকরণের কারণ শিবিরের সার্বিক অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলা৷ স্থানীয় প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী সেখানে ৮০০ থেকে ১ হাজারের মতো অভিবাসনপ্রত্যাশীর অবস্থান৷ তবে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে এমন কিছু সংগঠন জানিয়েছে, তথাকথিত ‘জঙ্গল'-এ এই মুহূর্তে অন্তত ৩ হাজার ৪৫০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী বাস করছেন৷
স্থানীয় প্রশাসন ‘জঙ্গল' থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অন্য জায়গায় সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তাদের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে৷ মামলার বাদি ২৫০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী এবং অভিবাসীদের কিছু অধিকার সংস্থা৷ মঙ্গলবারই মামলার রায় হওয়ার কথা৷
অবশ্য রায় প্রদানের আগে মঙ্গলবারই ক্যালে শহরের কথিত ‘জঙ্গল' শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করছেন মামলার বিচারক৷ শিবিরের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার জন্যই সেখানে যাচ্ছেন তিনি৷
ক্যালের এই ‘জঙ্গল'-এর অভিবাসনপ্রত্যাশীরা ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে ব্রিটেনে প্রবেশ করতে চান৷ এ ‘স্বপ্ন' পূরণের জন্য তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ক্যালের ওই এলাকায় দুর্বিষহ কষ্টের জীবনযাপন করছেন৷ সংবাদমাধ্যমের খবর এবং অভিবাসনপ্রত্যাশী ও অভিবাসী অধিকার সংস্থাগুলোর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ক্যালের ওই শিবিরের সুযোগ-সুবিধা আন্তর্জাতিক মানের কাছাকাছিও নয়৷ সেখানে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের৷
ক্যালের স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, ‘জঙ্গল' থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সরিয়ে নেয়ার জন্য ইতিমধ্যে ফ্রান্সের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১০০টি শিবির প্রস্তুত করা হয়েছে৷ জানা গেছে, পরিত্যক্ত জাহাজের কিছু কন্টেইনারকেও শরণার্থী শিবির হিসেবে ব্যবহার করা হবে৷ অভিবাসনপ্রত্যাশীরা জানিয়েছেন, ওই আশ্রয়শিবিরগুলোও মোটেই সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনযাপনের উপযুক্ত নয়৷
শীত মৌসুমে আবাসনের সুব্যবস্থা না করে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগকে ‘ভয়ংকর পদক্ষেপ' মনে করছেন অভিবাসনপ্রত্যাশী এবং তাদের অধিকার সংরক্ষণ সংস্থাগুলো৷ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটি সাহায্য সংস্থার প্রধান ক্রিস্টিয়ান সালোমে মনে করেন, ‘‘এ উদ্যোগ আসলে ভয়ংকর এক পশ্চাদযাত্রা৷''
এসিবি/ডিজি (এএফপি)