‘অভিবাসীদের জীবন’
২৬ মে ২০১৫ইন্দোনেশিয়া সরকার জানিয়েছে, বাংলাদেশি অভিবাসন প্রত্যাশীদের খুব তাড়াতাড়িই ফেরত পাঠানো হবে৷
এর আগে ইন্দোনেশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তারা মনে করে এ মুহূর্তে সাগরে যারা ভেসে বেড়াচ্ছে, অনাহারে-অর্ধাহারে যাঁদের জীবন বিপন্ন, তারা কেউ মুসলিম রোহিঙ্গা নয়, তাদের সকলেই বাংলাদেশি৷ ঠিক এমন যুক্তিতেই এতদিন ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে মিয়ানমার৷ ভাগ্যান্বেষণে বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়া কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে বাংলাদেশিও আছে – তা ঠিক৷ তবে সবাই বাংলাদেশের, কেউ রোহিঙ্গা নন, তাই তাঁদের সবাইকেই ফিরিয়ে দেয়া হবে – ইন্দোনেশিয়ার এ পর্যবেক্ষণ এবং সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক? কতটা মানবিক?
খবরটি একজন টুইট করেছিলেন৷
সেখানে মন্তব্যের ঘরে ইন্দোনেশিয়ার বক্তব্যের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ একজন লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশি অভিবাসীরা তাঁদের ছোট ছোট সন্তানসহ পুরো পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে যাবে, এটা আমার বিশ্বাস হয় না৷''
আরেকজন মনে করেন, ইন্দোনেশিয়ার দাবি ঠিক মনে করার কোনো কারণ নেই৷ দাবিটা ঠিক কিনা তা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তদন্ত করে দেখা উচিত৷
তবে জাতিসংঘ এ প্রসঙ্গে চূড়ান্ত কথা বলে দিয়েছে৷ তাদের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার দিল্লিস্থ কার্যালয় এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন টুইট করেছে৷ প্রতিবেদনের মূল বক্তব্য, দক্ষিণ এশিয়ার অভিবাসীদের ক্ষেত্রে আর সব কিছুর চেয়ে তাদের জীবন বাঁচানোর বিষয়টিকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বে দেয়া উচিত৷
কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, মিয়ানমারে অত্যাচার থেকে এবং বাংলাদেশে দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে মুক্তির আশায় মানুষগুলো যেসব দেশে যেতে চাচ্ছেন, সেসব দেশ তাঁদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর কাজেই বেশি তৎপর৷ বাংলাদেশ সরকারের সামনেও অন্য কোনো বিকল্প নেই৷ আগে যেমন সমস্যায় জর্জরিত দেশ হওয়া সত্ত্বেও মিয়ানমার থেকে আসা অসহায় মানুষদের একটা সময় পর্যন্ত নিজেদের ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে দিয়েছে, আশ্রয় দিয়েছে, তেমনি এখনো অনেক অভিবাসন প্রত্যাশীকে ফিরিয়েও নিতে হচ্ছে৷ কয়েকদিন আগে ২০০ অভিবাসন প্রত্যাশীকে ফিরিয়ে নেয়ায় মিয়ানমারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজও শুরু করেছে বাংলাদেশ৷
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ