হারিয়ে যাচ্ছে অরণ্য
২৬ এপ্রিল ২০১৩প্যারাগুয়ের গ্র্যান চাকো, অর্থাৎ চাকো কাঁটাঝোপের জঙ্গল পৃথিবী বিখ্যাত৷ সেখানে যেমন গরম, তেমন আর্দ্রতা, তেমন পোকামাকড়, সব মিলিয়ে প্যারাগুয়ানরা সেই জঙ্গলকে বলে ‘‘সবুজ নরক''৷ গ্র্যান চাকো সমতলের সেই জঙ্গল দক্ষিণ অ্যামেরিকার ঐ প্রত্যন্ততম এলাকার বেশ কয়েকটা দেশ জুড়ে৷ সমস্যা এই যে, প্রতিবেশি ব্রাজিলের ক্যাটল ব়্যাঞ্চার বা খামারচাষিদের নজর পড়েছে প্যারাগুয়ের এই চাকো অরণ্যের উপর৷ তাদের দরকার গরু চরানোর জমি৷ এই সব ব়্যাঞ্চার আর তাদের হাজার হাজার গরুর পাল গত পাঁচ-ছ' বছরের মধ্যে চাকো জঙ্গলের দশ শতাংশ সাবাড় করে দিয়েছে৷ সাধে কি প্যারাগুয়েকে বলে ডিফরেস্টেশন চ্যাম্পিয়ন!
তবে প্যারাগুয়ের রেইনফরেস্ট ধ্বংস হওয়ার কাহিনি শুধু একা প্যরাগুয়ের নয়৷ বন কেটে বসত, জঙ্গল কেটে চাষ-আবাদের জমি, আবাসন প্রকল্প, বাংলাদেশেও কম অরণ্যনিধন হয়নি৷ শুধু তাই নয়, এখনও হয়ে চলেছে এ ঘটনা৷ সাধারণ পরিভাষায় যাকে ইন্দা-বর্মা অঞ্চল বলা হয়, সেখানে এখন মাত্র ৫ শতাংশ রেইনফরেস্ট; আর বাংলাদেশে ছয় শতাংশ৷
পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলেন, পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য একটি দেশের ২৫ শতাংশ জমি বনজঙ্গলে ঢাকা থাকা উচিত৷ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটা ৬ শতাংশ৷ দেশের প্রায় ৫০ শতাংশ বনভূমি গত ২০ বছরে বিনষ্ট হয়েছে৷ ঢাকা, ময়মনসিং, রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, সর্বত্রই এক দৃশ্য৷ টাঙ্গাইল৷ পার্বত্য চট্টগ্রামে আছে ঝুমচাষ আর সেই সঙ্গে কচি গাছ কেটে কালোবাজারে বিক্রি৷ রবার চাষের জন্যে জঙ্গল কেটে রবার গাছ বসানো হয়৷ দক্ষিণের উপকূলীয় অঞ্চলে, যেমন সাতখিরা কিংবা কক্সবাজারে, চিংড়ি মাছের চাষ৷ সব মিলিয়ে বাংলাদেশে ডিফরেস্টেশন চলেছে বছরে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হারে৷
এসি/ডিজি