অশান্ত চীন, হান গোষ্ঠীর প্রতিশোধের ঘোষণা
৭ জুলাই ২০০৯উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের শিনচিয়াং প্রদেশের দাঙ্গার কারণে আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে চীন৷ রোববারের এ দাঙ্গায় সরকারী হিসেবে ১৫৬ জন মারা যায়, আহত হয় ১ হাজার ৮০ জন৷ তারপর থেকে মঙ্গলবার দুপুরের আগ পর্যন্ত কোথাও কোথাও মিছিল-পাল্টা মিছিলের ঘটনা ঘটলেও বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি৷ তবে দুপুরের পর থেকে বদলে যেতে থাকে পরিস্থিতি৷ দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উরুমচিতে হাতে লাঠি, মাংশ কাটার ছুরি ইত্যাদি নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে চীনের সংখ্যাগুরু হান গোষ্ঠী৷ এদিকে চীনের এ ঘটনায় বাইরেও উদ্বেগ বাড়ছে৷ বার্লিনে দ্বিপাক্ষিক এক বৈঠক শেষে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী কেভিন রুড সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য্যশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷ ম্যার্কেল বলেন, সহিংসতা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেয়া উচিত৷ ওদিকে রাশিয়া সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও এক বিবৃতিতে শিনচিয়াংয়ের সবাইকে ধৈর্য ধরতে বলেছেন৷
এর আগে ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার নভি পিল্লাই এক বিবৃতিতে চীনের বিবদমান দুটো গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের প্রতি সংযত আচরণ করার আহ্বান জানান৷
এত কিছুর পরও রোববারের রক্তক্ষয়ী এ দাঙ্গার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে৷ মঙ্গলবার সকালে জার্মানির মিউনিখে চীনা কনসুলেট জেনারেলে কে বা কারা দুটো বোমা ছুঁড়ে মারে৷ তবে পুলিশ জানিয়েছে, এতে ভবনের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি, কোনো হতাহতের ঘটনাও ঘটেনি৷
মঙ্গলবার দুপুরে উরুমচিতে প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে হান গোষ্ঠীর ১০ হাজারের মতো লোক মিছিল বের করলে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে পুলিশ বেশ কয়েকবার তাদের ছত্রভঙ্গ করে৷এর আগে রোববারের সহিংশতায় জড়িত থাকতে পারে এমন ১৪ শ ৩৪জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷হানরা জানিয়েছেন, এটুকুতে তারা সন্তুষ্ট নন৷ মিছিল থেকে এক তরুণকে বলতে শোনা গেছে, সরকার কী করবে তার অপেক্ষায় না থাকে এবার আমরাই যা করার করবো৷ এদিকে পরিস্থিতি শান্ত করতে উরুমচিতে মঙ্গলবার রাতের জন্য সান্ধ্য আইন জারি করা হয়েছে৷ শিনচিয়াংয়ের কমিউনিস্ট পার্টি প্রধান ওয়াং লেকুয়ান সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন,‘ এখন হান গোষ্ঠীর লোকেরা নিরীহ উইগুরদের ওপর হামলা চালালে সেটাও হবে হৃদয়বিদারক৷’
প্রতিবেদক: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার