1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অ্যামেরিকার চেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া!

৯ জুলাই ২০১১

শুক্রবার মার্কিন নভোযান ‘অ্যাটলান্টিস’ শেষবারের মতো আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র আইএসএস’এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেছে৷ ১২ দিন পর এটা পৃথিবীতে ফিরে আসবে৷ এর ফলে শেষ হয়ে যাবে নাসা’র শাটল কর্মসূচি৷

https://p.dw.com/p/11s4a
The space shuttle Atlantis lifts off from the Kennedy Space Center Friday, July 8, 2011, in Cape Canaveral, Fla. Atlantis is the 135th and final space shuttle launch for NASA. (AP Photo/Chris O'Meara)
ছবি: ap

১৯৭২ সালে অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন রিচার্ড নিক্সন৷ তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে স্পেস শাটল কর্মসূচির উদ্বোধন করেছিলেন৷ তবে এর প্রায় নয় বছর পর মহাকাশে প্রথমবারের মতো নভোযান পাঠাতে সক্ষম হয়েছিল নাসা৷ সেটা ছিল ১৯৮১ সালের এপ্রিল মাস৷ আর নভোযানটি ছিল ‘কলম্বিয়া'৷

ঐ সময়ে মহাকাশে নভোযান পাঠানো ছিল একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা৷ কিছু তথ্য দিলেই সেটা বোঝা যাবে৷ যেমন কলম্বিয়া যখন মহাকাশে যায় সেই সময় অ্যামেরিকাতে বাণিজ্যিকভাবে মোবাইল ফোনের কোনো সেবা ছিল না৷ প্রথম পারসোনাল কম্পিউটারটি এসেছিল আরও চার মাস পর৷ আইবিএম তৈরি করেছিল সেটা৷ যার ওজন ছিল সাড়ে নয় কেজি৷

কিন্তু এত বছর পর যখন শাটল কর্মসূচি শেষ হতে চলেছে তখন বিশেষজ্ঞরা বসেছেন হিসাব-নিকাশ করতে৷ কেউ বলছেন এটা ছিল সফল৷ আর কেউ বলছেন যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল সেটা পূরণ হয়নি৷

নাসা'র প্রধান ইতিহাসবিদ বিল ব্যারি বলছেন, সাধারণ মানুষের জন্য সহজে ও কম খরচে মহাকাশে যেতে পারা নিশ্চিত করাটাই ছিল শাটল কর্মসূচির লক্ষ্য৷

কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি৷ কারণ এখনো মহাকাশে যেতে পারেন শুধু বিশেষ শিক্ষায় শিক্ষিত লোকজন৷ শুধু তাই নয়, মহাকাশে যাওয়ার জন্য চাই বিশেষ প্রশিক্ষণ৷ আর খরচ? সেটা মহাকাশের মতোই উঁচু৷ একটি তথ্য দিলে সেটা অনুমান করা যাবে৷ মার্কিন শাটল কর্মসূচি শেষ হয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের এখন মহাকাশে যেতে রাশিয়ার ‘সোয়ুজ' স্পেস ক্যাপসুল ব্যবহার করতে হবে৷ যার প্রতিটি আসনের ভাড়া ৫১ মিলিয়ন ডলার৷ অর্থাৎ প্রায় ৩৮০ কোটি টাকা!

তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে শাটল কর্মসূচি অবশ্যই সফল ছিল৷ যেমন আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র বা আইএসএস স্থাপনের সময় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণ নিয়ে যেতে নভোযানগুলো ব্যবহার করা হয়েছে৷ এছাড়া অরবিটে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ স্থাপনে কাজ করেছে অ্যাটলান্টিস নভোযান৷ এর ফলে জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে৷

The space shuttle Atlantis lifts off from the Kennedy Space Center Friday, July 8, 2011, in Cape Canaveral, Fla. Atlantis is the 135th and final space shuttle launch for NASA. (Foto:Denis Paquin/AP/dapd)
ছবি: dapd

কিছু তথ্য

১৯৮১ সালে প্রথমবারের মতো মহাকাশ যাত্রা শুরুর পর এখন পর্যন্ত মোট ১৩৪ বার মহাকাশে যাওয়া হয়েছে৷ অর্থাৎ অ্যাটলান্টিস'এর শেষ যাত্রাটি হচ্ছে ১৩৫তম৷ মোট পাঁচটি নভোযান ব্যবহৃত হয়েছে এই কর্মসূচিতে৷ এর মধ্যে চ্যালেঞ্জার ও কলম্বিয়া নভোযান দুটি যথাক্রমে ১৯৮৬ ও ২০০৩ সালে দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়৷ ফলে মারা যায় নভোযানে থাকা বিজ্ঞানীরা৷ বাকী তিনটি নভোযান হলো ডিসকভারি, এন্ডেভার ও অ্যাটলান্টিস৷ এগুলোর মধ্যে ডিসকভারি সবচেয়ে বেশি ৩৯বার মহাকাশে গেছে৷ আর সেখানে থেকেছে মোট ৩৬৫ দিন অর্থাৎ এক বছর৷

শাটল কর্মসূচিতে খরচ হয়েছে প্রায় ২০৮ বিলিয়ন ডলার৷ অন্যদিকে চাঁদে যাওয়ার যে কর্মসূচি, অ্যাপলো, তাতে ব্যয় হয়েছে তার চেয়ে ৫৭ বিলিয়ন ডলার কম৷ অর্থাৎ প্রায় ১৫১ বিলিয়ন ডলার৷

রাশিয়া এগিয়ে

শাটল কর্মসূচি শেষ হয়ে গেলে রাশিয়া অ্যামেরিকার চেয়ে এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন অনেকে৷ কেননা এরপর মহাকাশে যাওয়ার জন্য অ্যামেরিকার আর কোনো যান থাকবে না৷ থাকবে শুধু রাশিয়ার নভোযান৷

তবে রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থা ‘রসকসমস' এমনটা মনে করছেনা৷ সংস্থার উপ-প্রধান ভিটালি দাভিদোভ বলছেন, ‘‘মহাকাশ প্রতিযোগিতায় আমরা জিতে গেছি এটা আমরা বলতে পারিনা৷ তবে আমরা একটা পর্যায়ের শেষে পৌঁছেছি, সেটা বলা যায়৷''

অ্যামেরিকা ভবিষ্যতে নতুন নভোযান তৈরির চেষ্টা করবে৷ তবে সেজন্য সর্বোচ্চ দশ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছে নাসা৷ বেসরকারি খাতের কোম্পানি বোয়িং, স্পেসএক্স বা সিয়েরা নেভেদার সঙ্গে মিলে এবার নভোযান বানাবে নাসা৷

নতুন নভোযানে নকশায় পরিবর্তন আনা হবে, যেন আরও কম খরচে মহাকাশে যাওয়া যায়৷ তাহলেই শাটল কর্মসূচির প্রাথমিক লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হবে৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য