আইএস-এর বিরুদ্ধে ইরান: আমার শত্রুর শত্রু!
৪ ডিসেম্বর ২০১৪‘আমার শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু' – রাজনীতিতে এই কথাটার খুব প্রচলিত৷ এটা মাথায় রেখে যদি ব্রাসেলসের বৈঠকের দিকে তাকানো যায় তাহলে দেখতে পাবেন, জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস-এর বিরুদ্ধে নতুন পদক্ষেপের জন্য যে বৈঠক যাকা হয়েছে, সেই প্রতিনিধিদের তালিকায় নেই ইরান৷ আছে অন্য ৬০টি রাষ্ট্র৷
এখন মজার বিষয় হলো এই জঙ্গি দলের বিরুদ্ধে লড়ছে ইরান৷ এমনকি ধারণা করা হচ্ছে, ইরান আইএস নির্মূলে ফাইটার জেট ব্যবহার করছে৷ যুক্তরাষ্ট্র গণমাধ্যমে এ কথা জানিয়েছে৷ তবে ইরান যথারীতি এই দাবি অস্বীকার করেছে৷ কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে রাজনীতিটা আসলেই একটি ভিন্ন৷ এখানে আমার শত্রুর শত্রু আমার বন্ধুরও শত্রু হতে পারে৷ ইরানের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে৷ ইরান, যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা বিশ্বের শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসলামিক স্টেট৷ কিন্তু অন্যদিকে, ইরান যুক্তরাষ্ট্র এবং এর বন্ধু দেশ ইসরায়েল ও সৌদি আরবের শত্রু৷
অন্যদিকে, ইরান পশ্চিমা বিশ্বের শত্রু সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বন্ধু৷ তবে এমন একটা সময় আসে যখন বন্ধুও শত্রুতে পরিণত হয়৷ তাই আইএস-এর বিরুদ্ধে ইরানের হামলার বিষয়টিতে কোন উপসংহারে পৌঁছানো কঠিন৷ কেননা মার্কিন গণমাধ্যম প্রচার করেছে ইরানের হামলার বিষয়টি৷ কিন্তু ইরান স্বীকার করেনি৷
ইরাকের উপর প্রভাব
আইএস-এর বিরুদ্ধে ইরানের হামলা চালানোর আর একটা কারণ হয়ত ইরাকের উপর নিজেদের আধিপত্য বিস্তার৷ ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডদের একটা বিশেষ ইউনিট আছে বিদেশে অভিযানের জন্য৷ এর নাম আল-কুদস ব্রিগেডস৷ এই গ্রীষ্মে ঐ ব্রিগেডের প্রধানের একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে তিনি ইরাকে ছিলেন৷ আর যেহেতু ইরানে শিয়াদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, তাই সুন্নিদের হঠিয়ে ইরাকে আধিপত্য বিস্তার করা একটা বড় কারণ৷
প্রতিবেশী দেশগুলোতে ইরানের প্রভাব
প্রতিবেশী দেশগুলোতে যে ইরানের প্রভাব রয়েছে, সেটা খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টও জানেন৷ তাই হয়ত অক্টোবরে তিনি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেইকে একটি চিঠি লিখেছিলেন, যেখানে বলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আইএস-এর বিরুদ্ধে যে হামলা চালাচ্ছে তাতে ঐ অঞ্চলে ইরানের অবস্থান দুর্বল হবে না এবং ইরানের বন্ধু সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের জন্যও তা ক্ষতির কারণ হবে না৷