আদালতের রায়ের অপেক্ষায় প্রধানমন্ত্রী, কাল ‘কমপ্লিট শাটডাউন'
১৭ জুলাই ২০২৪বুধবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মঙ্গলবারের সংঘর্ষে ৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত হবে৷ কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারাই হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও নাশকতা চালিয়েছে তাদের শাস্তির মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবারও ঢাকাসহ সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনরতদের (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) সঙ্গে পুলিশ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়েছে। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার পর তারা হলে ও ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে চাইলে ক্যাম্পাসে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করলে পুলিশ অ্যাকশনে যায়।
বিশেষ করে পদ্মা সেতু ও যমুনা সেতুর সড়ক অবরোধ করলে দুপুরে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ হয়। এতে স্থানীয় ছাত্রলীগ এবং যুবলীগও অংশ নেয় বলে জানা গেছে।
ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটাবিরোধী (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) শিক্ষার্থীরা হল না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ক্যাম্পাসগুলোতে পুলিশ, বিজিবি এবং আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। প্রবেশ পথগুলো পুলিশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনরতরা মঙ্গলবার সারা দেশে ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনায় বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল করেছে। তারপর কফিন মিছিল করে তারা ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। উল্টো ভিসিকে তার বাসা ছাড়ার নোটিশ দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটাবিরোধীরা বলছেন,তারা হলেই থাকবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে মঙ্গলবার রাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বের করে দেয়া হয়েছে। এখন হলগুলোতে কোটাবিরোধীরা রয়েছে। বুধবার সকালে সিন্ডিকেটের বৈঠকের পর সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে হল ছাড়তে বলা হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীই হল ছাড়তে শুরু করেছেন। এদিকে ছাত্রীদের পাঁচটি হলসহ আরো বেশ কিছু হলে তারা ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রভোস্টদের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করেন।
কোটাবিরোধীরা ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিলে পুলিশ টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর পুলিশ বিভিন্ন হলের সামনে অবস্থান নেয়। তারা শিক্ষার্থীদের সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে হল ছেড়ে চলে যেতে বলেন। কিন্তু অনেকেই পুলিশের আহ্বানে সাড়া দেয়নি।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ ও গায়েবানা জানাজা করতে পুলিশের বাধা পেলে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পুলিশ তখন সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারগ্যাস ছোঁড়ে। তখন সাংবাদিকদের ওপরও হামলা করে পুলিশ। এতে পাঁচ-ছয়জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন বলে জানান সাংবাদিক মোস্তাকিম নিশান।
অন্যদিকে বগুড়ায় কোটাবিরোধীদের হামলায় পাঁচজন সাংবাদিক আহত হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জসীম উদ্দিন হলের ছাত্র ওমর ফারুক জানান, "শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই দুপুরের মধ্যে হল ছেড়ে চলে যান। তবে যারা কোটাবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন এবং সমন্বয় করছেন, তারা হল ছাড়েননি। তারা শিক্ষার্থীদের প্রতিও হল না ছাড়ার আহ্বান জানান। এদিকে মঙ্গলবার রাতে বিভিন্ন হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে। ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের রুমও ভাঙচুর করা হয়। আর রাতেই ছাত্রী হলসহ বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বের করে দেয়া হয়।
তবে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধে ইউজিসির নির্দেশনার পর আমরা নিজেরাই হল ছেড়ে চলে গেছি। আমরা সংঘাত এড়াতে চেয়েছি। চাইনি আর কোনো সংঘাত হোক।” তার কথা, "আমাদের কক্ষ সাধারণ ছাত্ররা ভাঙচুর করেনি। ছাত্রদল ও শিবিরের ছেলেরা এই কাজ করেছে। সাধারণ ছাত্ররা এটা করতে পারে না।”
শাহবাগ এলকায় দুপুর থেকে যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা অবস্থা নেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘‘আমাদের অস্তিত্বের প্রতি হামলা এসেছে, হুমকি এসেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা আমাদের করতেই হবে। কাজেই আপনারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রস্তুত হয়ে যান।''
অন্যদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, "কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিএনপি সরাসরি জড়িত নয়। তবে এই আন্দোলনে আমাদের নৈতিক সমর্থন রয়েছে। সেই সমর্থন আমরা দিয়ে যাবো।”
বায়তুল মোকাররম মসজিদে বুধবার জোহরের নামাজের পর গতকালের সংঘর্ষে নিহতদের জন্য গায়েবানা জানাজা শেষে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। তিনি বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঙ্গলবার রাতের অভিযানকে ‘সাজানো নাটক' বলে অভিহিত করেন। পুলিশ দাবি করেছে, তারা ওই অভিযানে ৬০টির দেশি-বিদেশি অস্ত্র, পেট্রোল বোমা উদ্ধার ও সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটাবিরোধীরাও হল না ছেড়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে চাইছেন। তারা সকাল থেকেই ভিসিকে তার বাসভবনে অবরুদ্ধ করে রাখে। দুপুরের পর তাদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরাও হল না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেখানে সংঘর্ষ হয় পুলিশের সঙ্গে।
ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও সংঘর্ষ হয়েছে। কুষ্টিয়া, বগুড়া, ময়মনসিংহে সংঘর্ষ হয়েছ। বরিশালে সংঘর্ষ পুরো শহরে ছড়িয়ে পড়ে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও হল ছাড়তে চাইছেন না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টর ড.মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, "রাতে আমরা ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকতে দেইনি। আমরা আসলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম দুপুর থেকে। শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে অনুরোধ করছি। এখন ক্যাম্পাসে পুলিশ, বিজিবি কাজ করছে।”
দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাবেশ' হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে। সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরিন বলেন, ‘শপথের মর্যাদা আপনারা (সরকার) রক্ষা করেন না। অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী হয়ে একসময় কোটা বাতিল করেন। আমরা যারা প্রশ্ন করতে ভুলে গিয়েছি, আমাদের কথা বলার অধিকারের কথা আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে নতুন করে শিখছি।''
কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম আহ্বায়ক সারজিস আলম বলেন, "আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে আমাদের অবস্থান ছাড়বো না। আমাদের আন্দোলনে কোনো রাজনৈতিক প্রভাব নেই। সেরকম যদি কখনো মনে হয়, তাহলে আমি সমন্বয়কের পদ ত্যাগ করবো।”
তিরি আরো বলেন, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ওপর দফায় দফায় পুলিশ হামলা চালাচ্ছে।ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন এলকায় হামলা হয়েছে। রাত ৯টার পর আমরা নতুন কর্মসূচি দেবো।”
তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন," আমরা হলে না থাকলে ভিসি স্যার ও শিক্ষকরাও থাকতে পারবেন না। আর ছাত্র লীগের নেতাদের কক্ষে আমরা হামলা করিনি, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা করেছে। আমরা হলগুলো ছাত্র রাজনীতি-মুক্ত ঘোষণা করেছি।”
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার খ. ম. মহিদ উদ্দিন বলেন, " ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্ন কিছু সংঘর্ষ হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।” আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, " বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে আমরা হল খালি করার ব্যবস্থা করবো।”
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক মঙ্গলবার প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, "আমরা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত। উদ্বেগ নিয়েই গভীরভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্য সব জায়গায় মানুষের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে।'' জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র আরো বলেন, ‘‘যে-কোনো হুমকি ও সংঘাত থেকে প্রতিবাদকারীদের রক্ষা করার উদ্যোগ নিতে আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।”
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাসহ পুরো ঢাকায় মোবাইল ইন্টারনেট নেওয়ার্ক কখনো ডাউন আবার কখনো বন্ধ রাখা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হানিা তার ভাষণে বলেন,"২০১৮ সালে ছাত্র সমাজের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিল করে একটা পরিপত্র জারি করে। পরবর্তীকালে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে কোটা বহাল রাখার পক্ষে উচ্চ আদালত ২০১৮ সালের জারি করা সরকারের পরিপত্র বাতিল করে দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে পরিপত্র বহাল রাখার জন্য সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করা হয় এবং মহামান্য আদালত শুনানির দিন ধার্য করে। এ সময় আবার ছাত্ররা কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলনের শুরু থেকেই সরকার যথেষ্ট ধৈর্য ও সহনশীলতা প্রদর্শন করেছে। বরং আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পুলিশ সহযোগিতা করে। মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যখন আন্দোলনকারীরা স্মারকলিপি প্রদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করে, সে ক্ষেত্রে তাদের সুযোগ করে দেওয়া হয় এবং নিরাপত্তারও ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”
তিনি বলেন,"দুঃখের বিষয় হলো এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী তাদের উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করবার জন্য বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে। যেহেতু বিষয়টি উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়েছে, তাই সকলকে ধৈর্য ধরতে আহ্বান জানাচ্ছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "কিছু মহল এই আন্দোলনের সুযোগটা নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করবার সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। এর ফলে, এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটেছে তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল। আপনজন হারাবার বেদনা যে কতটা কষ্টের তা আমার থেকে আর কে বেশি জানে?”
তিনি নিহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বলেন, "আমি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। যে সকল ঘটনা ঘটেছে তা কখনোই কাম্য ছিল না। চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীরা বহুতল ভবনের ছাদ থেকে ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে নির্মমভাবে নিচে ছুঁড়ে ফেলে অনেক ছাত্রের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। তাদের লাঠিপেটা এবং ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে, একজন মৃত্যুবরণ করেছে, অনেকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ঢাকা, রংপুর এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবন ও ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক হলে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর করা হয়।
সাধারণ পথচারী, দোকানীদের আক্রমণ, এমনকি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স চলাচলেও বাধা প্রদান করা হয়। মেয়েদের হলে ছাত্রীদের উপর আক্রমণ করা হয়েছে এবং লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। আবাসিক হলে প্রভোস্টদের হুমকি দেওয়া ও আক্রমণ করা হয়েছে। শিক্ষকদের উপর চড়াও হয়ে তাদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন,"আমি বিশ্বাস করি, যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িত, তাদের সাথে এই সকল সন্ত্রাসীদের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং সন্ত্রাসীরা এদের মধ্যে ঢুকে সংঘাত ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, তাদের পরিবারের জন্য জীবনজীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে যে সহযোগিতা দরকার. তা আমি করব।”
"আমি দ্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি, যারা হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকা্ণ্ড চালিয়েছে এরা যেই হোক না কেন, তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন," আমি আরো ঘোষণা করছি, হত্যাকাণ্ডসহ যে সকল অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, সুষ্ঠু বিচারের ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে সে সকল বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। কাদের উসকানিতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হলো, কারা কোন উদ্দেশ্যে দেশকে একটি অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিলো, তা তদন্ত করে বের করা হবে।”
"সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছে। আপিল আদালতে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। আদালত শিক্ষার্থীদের কোনো বক্তব্য থাকলে তা শোনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। এই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সুযোগ রয়েছে। এই আইনি প্রক্রিয়া সমাধানের সুযোগ থাকা সত্বেও রাস্তায় আন্দোলনে নেমে দুষ্কৃতিকারীদের সংঘাতের সুযোগ করে দেবেন না। সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার জন্য আমি সকলকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।