আফগানিস্তানে মাইনের আঘাতে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে
১৫ এপ্রিল ২০১০আফগানিস্তানের দক্ষিণে তালেবান বিদ্রোহীরা বিস্তীর্ণ এলাকায় বোমা ও মাইন পেতে রেখেছে৷ আন্তর্জাতিক বাহিনী বা আফগান সেনাবাহিনীর অভিযান ব্যর্থ করতে এটা তাদের অন্যতম কৌশল৷ কিন্তু অধিকাংশ সময়ে নিরীহ মানুষই এই মরণ-ফাঁদের শিকার হচ্ছে৷ আন্তর্জাতিক রেড ক্রস'এর এক রিপোর্টে এই ভয়াবহ বিপদের এক সামগ্রিক চিত্র উঠে এসেছে৷
হেলমন্দ ও কান্দাহার প্রদেশে আন্তর্জাতিক ও আফগান বাহিনী তালেবান বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালাচ্ছে৷ দুই পক্ষের এই সংঘাতের ফলে ঐ এলাকার সাধারণ মানুষের জীবনের ঝুঁকি মারাত্মক হারে বেড়ে গেছে৷ রেড ক্রস'এর রিপোর্ট অনুযায়ী বোমা বা মাইনের আঘাতে আহতের সংখ্যা ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে৷ কান্দাহারের মীরওয়াইস হাসপাতালে শুধু জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসেই মাইনের আঘাতে আহত রোগীর সংখ্যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে৷ মার্চ মাসে ৫১ জন এমন রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে৷ রেড ক্রস ঐ হাসপাতাল চালাতে বিশেষ সাহায্য করে থাকে৷
রেড ক্রস'এর রিপোর্ট অনুযায়ী সরাসরি সংঘাতের তুলনায় এই ধরনের বিস্ফোরকের আঘাতে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি৷ এই ধরনের বোমা বা মাইন সহজেই তৈরি করা যায়৷ সৈন্য বা নিরীহ মানুষ, কেউই এই মরণ-ফাঁদ থেকে রেহাই পায় না৷ মার্কিন বা ন্যাটো বাহিনীর উন্নত সামরিক সরঞ্জামকেও অকেজো করে দিতে পারে সস্তার এই বোমা৷ শুধু চলতি বছরেই ১৫৭ জন বিদেশি সৈন্য আফগানিস্তানে এমন বিস্ফোরকের আঘাতে প্রাণ হারিয়েছে৷ ২০০৯ সালে এই সংখ্যা ছিল ৫২০৷ তাছাড়া এমন এক-একটি বিস্ফোরণে গড়ে প্রায় ৮ জন আহত হয় এবং সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে পড়ে৷
শুধু রেড ক্রস নয়, জাতিসংঘের এক রিপোর্টেও আফগানিস্তানে মাইন'এর বিধ্বংসী শক্তির একটা চিত্র তুলে ধরা হয়েছে৷ চলতি বছরের শুরুতে প্রকাশিত ঐ রিপোর্ট অনুযায়ী ২০০৯ সালে ২,৪১২ জন নিরীহ মানুষ মাইনের আঘাতে নিহত হয়েছে৷ ২০০৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ২,১১৮৷ অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাহিনী আরও সতর্ক হয়ে যাওয়ায় তাদের অভিযানে নিরীহ মানুষের মৃত্যুর হার ২৮ শতাংশ কমে গেছে৷ তা সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত এমন অভিযানে মৃতের সংখ্যা প্রায় ১২০,০০০৷ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেটস সাম্প্রতিক এমন এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে আলাদা করে তদন্ত করা হচ্ছে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক