আফগান টিভিতে যাত্রা শুরু করল শিশুতোষ ‘সিসেম স্ট্রিট’
৮ ডিসেম্বর ২০১১‘বাগছে সিমসিম', এই নাম নিয়েই কথা বলা পুতুল এলমো আর সেই মস্ত বড় পাখির চরিত্র সহ সিসেম স্ট্রিট এর আফগানিস্তান জয় শুরু হল এই সপ্তাহেই৷ জিম হেনসনের সেই মাপেট বা কথা বলা পুতুলকে নিয়ে ছোট্ট ছোট্ট শিক্ষামূলক টেলিসিরিয়ালের মোট ২৬টি আধঘন্টার পর্ব দেখানো শুরু হয়েছে আফগানিস্তানে৷ তবে আফগানিস্তানের সমাজের সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় বৈশিষ্ট্যের কথা মাথায় রেখে কিছু চরিত্র কাটছাঁট করা হয়েছে মূল টিভি ধারাবাহিক থেকে৷ সেগুলি হল, আবর্জনা প্রেমী অস্কার দ্য গ্রাউচ, দ্যা কাউন্ট এবং ভ্যাম্পায়ার ম্যাথস হুইজ৷
আফগানিস্তানের সিসেম স্ট্রিট বা বাগছে সিমসিম -এর আফগান মার্কিন প্রযোজক তানিয়া ফারজানা সংবাদসংস্থা এএফপি-কে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, অস্কার দ্য গ্রাউচের চরিত্রটি আবর্জনা পছন্দ করে৷ আফগান সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিতে তা আপত্তিকর ইঙ্গিত তৈরি করবে৷ তাছাড়া কাউন্টের চরিত্রটি বাদ পড়ার কারণ হল বাদুড়ের প্রতি সেই কাউন্টের আকর্ষণ৷ রক্ষণশীল ইসলামিক সমাজে যা আদৌ গ্রহণযোগ্য নয়৷ জানিয়েছেন তানিয়া৷
এছাড়াও আরও কয়েকটি ছোটখাটো পরিবর্তন করতে হয়েছে৷ যেমন ছেলেমেয়েদের একসঙ্গে নাচের দৃশ্যগুলি বাদ পড়েছে৷ কারণ নারী পুরুষের একত্রে নাচ আফগান সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়৷ যদিও সংগীতাংশ ঠিকঠাকই রাখা আছে৷ আসলে এই টিভি ধারাবাহিকের লক্ষ্য হল, যুদ্ধবিদ্ধস্ত আফগানিস্তানের সমাজে শিশুদের মধ্যে একটা অন্যধারার দৃষ্টভঙ্গি তৈরি করা৷ তাদের সামনে শিক্ষাকে নিয়ে আসা বিনোদনের মোড়কে মুড়ে৷ কথা বলা পুতুল এবং মজার সব চরিত্রের সাহায্যে এই দুনিয়াখ্যাত সিসেম স্ট্রিট আফগান শিশুদের মধ্যেও জনপ্রিয়তা পাবে যে সে বিষেয় নিশ্চিত প্রযোজকরাও৷
বস্তুত, সিসেম স্ট্রিট এর ভিন্ন দেশে যাত্রা এই প্রথম নয়৷ সেই ছয়ের দশকের শেষে মার্কিন পিবিএস চ্যানেলে যাত্রা শুরু করা এই জনপ্রিয় ধারাবাহিক সবসময়েই সাফল্যের তুঙ্গচূড়ায় অবস্থান করেছে৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা ভাষায় তাকে দেখা গেছে৷ বাংলাও ব্যতিক্রম নয়৷ বাংলাদেশের টেলিভিশনে এই ধরাবাহিক টিভি শো শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক ছবি হিসেবে দারুণ সাফল্য পেয়েছে৷ এই ছবির সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে এই জাতীয় মাপেট শো বা কথা বলা পুতুল নিয়ে শিশুদের জন্য একাধিক টিভি শো-এর আয়োজন দেখা গেছে ভারতেও৷ এবার আফগানিস্তানের পালা৷
জাতির যারা ভবিষ্যৎ, তাদের জন্য এই ‘বাগছে সিমসিম' বা ‘সিসম স্ট্রিট'-এর প্রয়োজনীয়তা সত্যিই অনস্বীকার্য৷ আগামীতে এই শিশুরাই দেশকে গড়বে৷ আজ তাদের জন্য প্রয়োজন সত্যিকারের গঠনমূলক শিক্ষা৷ যা কিছুটা হলেও দিতে পারবে ‘বাগছে সিমসিম৷'
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক