‘আমরা আত্মসমর্পন করবো না'
১ নভেম্বর ২০১৬১৯২৪ সালে প্রতিষ্ঠিত জুমহুরিয়েত তুরস্কে এখনো হাতে গোনা যে কয়টি সংবাদপত্র রেচেপ তাইয়েপ এর্দোয়ানের সরকারের সমালোচনা করছে, তাদের মধ্যে ন্যতম৷ সোমবার সংবাদপত্রটির প্রধান সম্পাদক মুরাত সাবুংকুসহ মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ তাঁরা কুর্দি জঙ্গি এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের হয়ে কাজ করছিলেন – এমন সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁদের৷
মানবাধিকার সংস্থাগুলো জুমহুরিয়েতে অভিযান এবং সাংবাদিকদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি আসলে গত ১৫ই জুলাইয়ের কথিত অভ্যুত্থান পরবর্তী দমন অভিযানেরই অংশ৷ এর মাধ্যমে সরকারবিরোধী শক্তিকে নির্মূল করার চেষ্টা করছে৷
১৫ জুলাইয়ের কথিত অভ্যুত্থান চেষ্টার পর সারা দেশে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে এর্দোয়ান সরকার৷ এ পর্যন্ত অন্তত ৩৭ হাজার মানুষকে বন্দি করা হয়েছে৷ প্রায় এক লাখ মানুষকে বরখাস্ত বা চাকরিচ্যূত করা হয়েছে৷ গ্রেপ্তার, বরখাস্ত বা চাকরিচ্যুতরা ধর্মীয় নেতা গুলেনপন্থি – এমন সন্দেহের কথা বলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার৷
এদিকে জুমহুরিয়েত জানিয়েছে, যত দমন-পীড়নই হোক, তারা আপোষ করবে না৷ পত্রিকাটি মঙ্গলবার লিখেছে, ‘‘আমরা আত্মসমর্পণ করবো না৷''
তুরস্কের গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করেন, জুমহুরিয়েতের বিরুদ্ধে এই অভিযান অপ্রত্যাশিত ছিল না৷ সে দেশের সুপরিচিত অনুসন্ধানী সাংবাদিক আহমেত সিক দাবি করেছেন, তিনি অনুমান করছিলেন এমনটি হবে৷ তিনি বলেছেন, ‘‘১৫ জুলাইয়ের অভ্যুত্থান চেষ্টার পরই আমি বলেছিলাম, ‘অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়েছে, তবে (সামরিক) জান্তা ক্ষমতায় আছে৷' তাদের পক্ষে কথা বলছে না, এমন সবাইকেই তারা টার্গেট করছে৷ এভাবেই ফ্যাসিজম মাথা চাড়া দিচ্ছে৷ এটা শুধু জুমহুরিয়েত বা কুর্দিদের বিরুদ্ধেই সীমাবদ্ধ থাকবে না৷ হয় তুমি আমার সঙ্গে আছো, নয়তে বিপক্ষে আছো – তুরস্কে বিভাজনটা এখন এ রকম৷''
‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স'-এর তুরস্ক প্রতিনিধি এরল ওন্দেরোগ্লু বলেছেন, ‘‘অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, গত দশ বছরে সরকারের হাতে যেসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সেগুলো ছাড়া যেন গণমাধ্যমের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের দরকারই নেই, তারা সবাই যেন সন্ত্রাসবাদের সমর্থক৷ শুধু তাদের সমর্থন দিচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোই যেন ভালো৷ আমরা এসব অভিযানের নিন্দা জানাই৷''
এসিবি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)