অবশেষে মুক্তি পেলো ‘রানা প্লাজা'
১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে পরিমনি-র প্রতিষ্ঠা প্রাপ্তি এখনো স্বপ্নের চৌহদ্দিতে৷ তবে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তিনি আলোচনায়, প্রচারের আলো ভালোই পেয়েছেন সেই সুবাদে৷ আলোচনা, বিতর্ক বেশি হয়েছে শুক্রবার মুক্তি পাওয়া ‘রানা প্লাজা'-র কারণে৷ উচ্চ আদালত ছবিটির প্রদর্শন ছয় মাসের জন্য স্থগিত করায় আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যমের শিরোনামেও গুরুত্ব পেয়েছিল খবরটি৷
আসলে ২০১৩ সাল থেকে একটা সময় পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে ঘুরেফিরেই এসেছে রানা প্লাজা-র খবর৷ এসেছে নানা কারণে৷ এবার ‘রানা প্লাজা' এলো রূপালি পর্দায় পোশাক শ্রমিকদের জীবনের রং নিয়ে৷
নজরুল ইসলাম খান পরিচালিত এ ছবিতে রেশমা হয়েছেন পরিমনি৷ সেই রেশমা, রানা প্লাজা-র ধংসস্তূপ থেকে যিনি ফিরে এসেছিলেন ভবন ধসে পড়ার ১৭ দিন পরে!
সাক্ষাৎকারে পরিমনি জানালেন, ধসে পড়া ভবনের নীচে রেশমাদের বেঁচে থাকার আপ্রাণ লড়াই, অনেকের হেরে যাওয়া, কারো বা পঙ্গুত্ব বরণ – সবই অল্পবিস্তর সেলুলয়েডে ফুটিয়ে তুলেছেন নজরুল ইসলাম খান৷ পরিমনির জন্য পর্দায় রেশমা হয়ে ওঠা সহজ ছিল না৷ অতি নিম্নবিত্তের জীবনকে ছুঁতে অভিনয় শিল্পীকে যত রকমের প্রয়াস চালাতে হয় তার অনেকগুলোই করেছেন পরিমনি৷ সময় কাটিয়েছেন নারী পোশাক শ্রমিকদের সঙ্গে৷ রেশমার ছবি, ভিডিও দেখেছেন বারবার৷ শুটিংয়ের সময় তাই নিজেকে অনেক সময় পোশাক শ্রমিকই মনে হতো৷ ধসে পড়া ভবনের নীচে ক্ষুধার্ত মানুষ যেমন চর্বনযোগ্য যা কিছু নাগালে পেয়েছেন তা-ই খেয়েছেন, শুটিংয়ের সময় পরিমনিও তেমনি ধুলোমাখা খাবার খেয়ে ফেলেছেন অজান্তে!
পোশাক শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে – এমন আশঙ্কা আমলে নিয়ে হাই কোর্ট যখন ‘রানা প্লজা'-র মুক্তির পথ সাময়িকভাবে রোধ করেছিল, খুব হতাশ হয়েছিলেন পরিমনি৷ তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সেই স্থগিতাদেশ খারিজ করে দিয়েছে, একটু দেরিতে হলেও দর্শকের আদালতে হাজির হতে পেরেছে ‘রানা প্লাজা'৷ ইউনিটের সবার মতো পরিমনি-ও তাই খুব খুশি৷
অভিনয়ে পদার্পণ টেলিভিশন নাটক ‘সেকেন্ড ইনিংস' দিয়ে৷ অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘ভালোবাসা সীমাহীন'৷ তবে ক্যারিয়ারের মোড় ঘোরানোর ছবি হতে পারে ‘রানা প্লাজা'৷ এতদিন পাদপ্রদীপের আলোয় ছিলেন ঠিকই কিন্তু রবীন্দ্রভারতী ফেরত নৃত্যপটিয়সী এবং সুকণ্ঠী সুশ্রী হিসেবে যেমন প্রচার পাওয়া স্বাভাবিক, তেমনটি এখনো পাননি পরিমনি৷ টেলিফোন সাক্ষাৎকারে অবশ্য এই আক্ষেপের প্রসঙ্গ আসেনি৷ এসেছে ‘রানা প্লাজা' নিয়ে আশাবাদের কথা৷
মুক্তির আগেই পরিচালক, প্রযোজকসহ ‘রানা প্লাজা'-র সবাই ঠিক করেছেন ভবন ধসে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়ে এখনো যাঁরা ধুঁকছেন, এ ছবি থেকে যা আয় হবে তার অর্ধেক তাঁদের পেছনে ব্যয় করা হবে৷
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে ‘রানা প্লাজা' দিয়েই আসলে ক্যারিয়ারের সেকেন্ড ইনিংস শুরু করলেন পরিমনি৷ ‘ভালোবাসা সীমাহীন' দিয়ে রূপালি পর্দায় অভিষেক হলেও দর্শকদের সীমাহীন ভালোবাসার নাগাল এখনো পাননি৷ সেই আক্ষেপ দূর করতে পারবে তো ‘রানা প্লাজা'?