ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চল রাশিয়ায় যুক্ত করতে গণভোট
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২শুক্রবার শুরু হওয়া এই গণভাট ইউক্রেনের পশ্চিমের দনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল এবং দক্ষিণের ঝাপোরিজঝিয়ার এবং খেরসন অঞ্চলে আয়োজন করা হয়৷ ক্রেমলিন নিয়োজিত প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এই গণভোট আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত চলবে বলে জানা গেছে৷
তবে এই গণভোটের কোনো আইনি ভিত্তি নেই বলে মন্তব্য জাতিসংঘসহ বেশ কিছু পশ্চিমা দেশের৷ ইউক্রেন বলছে, এই গণভোটের মাধ্যমে একটি জাতির বিরুদ্ধে অন্যায় করা হচ্ছে৷
বার্তাসংস্থাগুলো জানিয়েছে, গণভোটের উদ্দেশ্যে নির্বাচনী কর্মকর্তারা স্থানীয়দের বাড়িতে ব্যালটপেপার নিয়ে হাজির হচ্ছেন৷ সেইসাথে কিছু ভ্রাম্যমাণ ভোটকেন্দ্রও স্থাপন করা হয়েছে৷
রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডেও ভোট আয়োজন করা হয়েছে বলে জানা গেছে৷ অধিকৃত চারটি অঞ্চলের যেসব শরণার্থী এই মুহূর্তে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন, তাদের ভোটে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য এমন আয়োজন করা হয়েছে৷
ক্রেমলিন বলছে, ফলাফলের ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইউক্রেনের এই অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হবে৷
রাশিয়ার গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, শনিবার এ চারটি অঞ্চলের বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট প্রদানের জন্য উপস্থিত হচ্ছেন স্থানীয়রা৷
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, অস্ত্রধারী লোকেরা স্থানীয়দের ভোটকেন্দ্রে যেতে জোর করছে৷
গণভোট অনুষ্ঠানের প্রথমদিন শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের কিছু অংশকে যুক্ত করার এই প্রচেষ্টাকে আন্তর্জাতিক আইনের ‘প্রকাশ্য লঙ্ঘণ’ বলে মন্তব্য করেন৷
তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়ার উপর আরো কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র দেশগুলোর সাথে কাজ করবে৷’’
ইউক্রেন সরকারের বলছে, ভোট চলার এই পাঁচদিন ইউক্রেনে রাশিয়ার অধিকৃত এলাকাগুলো থেকে স্থানীয়দের সরে যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে৷
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদোমির জেলেনস্কি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্ব্যর্থহীনভাবে এই গণভোটের নিন্দা জানাচ্ছে৷ তিনি বলেন, এই গণভোট শুধু আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনই নয়, এটি কিছু মানুষের বিরুদ্ধে, একটি জাতির বিরুদ্ধে হওয়া অন্যায়৷
গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়া এ চারটি অঞ্চল এই মুহূর্তে পুরোপুরি রাশিয়া দখলে তেমন ইঙ্গিত এখনো পাওয়া যায়নি৷ সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, এই চারটি অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ইউক্রেনের সেনারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে৷
তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভোটাভুটির মাধ্যমে যদি এসব অঞ্চল রাশিয়া নিজেদের সাথে যুক্ত করে নেয় সেক্ষেত্রে যুদ্ধ পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নিতে পারে৷
রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর সেখানে হামলার ঘটনা ঘটলে মস্কো দাবি করতে পারে যে, পশ্চিমাদের কাছ থেকে পাওয়া অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে৷
আরআর/এডিকে (রয়টার্স, ডিপিএ, এপি)