‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দিকে নজর’
৫ সেপ্টেম্বর ২০১২আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সি মুডিজ'এর সতর্কবাণী সত্ত্বেও বাজার কিন্তু বিস্ময়কর রকম স্থিতিশীল রয়েছে৷ আসলে মুডিজ এতকাল শুধু বিভিন্ন দেশের মূল্যায়ন করে এসেছে৷ এবার তারা গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে পূর্বাভাষ দিয়েছে৷ তারা বলছে, এই মুহূর্তে ইইউ'র যে ‘ট্রিপল এ' রেটিং রয়েছে, তা কমে যেতে পারে৷ বিশেষ করে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির মতো দেশগুলির অর্থনৈতিক পরিস্থিতির যেভাবে অবনতি ঘটছে, তার ফলে এমন আশঙ্কা করছে মুডিজ৷ এই অবস্থায় গোটা রাষ্ট্রজোটের ক্রেডিট রেটিং কমে যেতে পারে৷ মঙ্গলবারও ইউরোপ সহ বিশ্বের অন্যান্য পুঁজিবাজারে মুডিজ'এর বক্তব্যের কোনো প্রভাব পড়ে নি৷ ইউরোর বিনিময় মূল্যও বেড়েছে৷ এর বড় কারণ অবশ্য একটাই৷ আগামী বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক রাষ্ট্রীয় বন্ড কেনার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে বলে বাজার আশা করে রয়েছে৷
চারিদিকে এত চাপ সত্ত্বেও ইসিবি সত্যি শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার ইউরোপের সংকটে জর্জরিত দেশগুলির বন্ড কিনতে পারবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে৷ ইসিবি'র প্রধান মারিও দ্রাগি এখনো তাঁর পরিকল্পনা কার্যকর করার প্রশ্নে অটল রয়েছেন৷ তিনি বলছেন, স্পেন বা ইটালির মতো দেশের জন্য ঋণের উপর বাজারে চড়া সুদ কমানোই মূল লক্ষ্য৷ তবে এই সব দেশকে একই সঙ্গে সংস্কারের কড়া শর্ত মানতে হবে৷ তিনি সমালোচকদের আশ্বস্ত করে বলছেন, টাকা ছেপে পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা তিনি আদৌ করছেন না৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কয়েকজন সাংসদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার আলোচনায় তিনি বলেছেন, ‘সেকেন্ডারি মার্কেট'এ ৩ বছরের জন্য, অর্থাৎ সাময়িকভাবে বন্ড কেনার পরিকল্পনা রয়েছে৷ এই সময়ের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হয়ে যাবে৷ তবে বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা আলোচনার অভাবের কারণে অনেকে দ্রাগির সমালোচনা করে চলেছেন৷ ‘ইউরো রক্ষা করতে যা করণীয় সব করা হবে' তাঁর এই মন্তব্যের ফলে বাজার শান্ত হয়েছিল বটে, কিন্তু এই প্রেক্ষাপটে ইসিবির এক্তিয়ার নিয়ে মৌলিক বিতর্ক শুরু হয়েছে৷
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাখই স্বাভাবিক কারণেই ইসিবি'র সক্রিয় ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ নিজের ঘর সামলাতে তিনি যতটা সম্ভব বাইরে থেকে আর্থিক সহায়তার চেষ্টা করছেন৷
কূটনৈতিক স্তরে জোরালো তৎপরতা চলছে৷ শীর্ষ নেতারা বার্লিন, প্যারিস, রোম ও এথেন্সের মধ্যে যাতায়াত করছেন৷ বিশেষ গ্রিসের সংকট সামাল দিতে বিভিন্ন স্তরে নানা উদ্যোগ চলছে৷ একদিকে গ্রিসের মতো দেশের সমস্যার মোকাবিলা, অন্যদিকে ইউরোপীয় স্তরে কাঠামোগত সংস্কারের পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন ম্যার্কেল, ওলঁদ ও ইউরোপীয় কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা৷ জার্মান অর্থমন্ত্রী ভল্ফগাং শয়েবলে বলেছেন, গ্রিস'কে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সংস্কারের কাজ করতেই হবে৷ একমাত্র সেক্ষেত্রেই এথেন্স বাকি প্রাপ্য অর্থ পাবে৷ দেউলিয়া হওয়া থেকে বেঁচে যেতে এবং ইউরো এলাকায় টিকে থাকতে গ্রিস'কে এই কাজ করতেই হবে৷
এসবি / এসি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)