1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপে কি যুদ্ধকালীন অর্থনীতির ঘোষণা আসছে?

৩০ মে ২০২৩

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গতবছর জুন মাসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ফ্রান্সের অবশ্যই ‘যুদ্ধকালীন অর্থনীতি' যুগে প্রবেশ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন৷

https://p.dw.com/p/4Rxyw
ফাইল ফটো
ফাইল ফটোছবি: Björn Trotzki/IMAGO

এরপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশনার থিয়েরি ব্রেতঁ এ বছরের মার্চ মাসে থেকে মাঝেমধ্যেই  এমন অর্থনীতি চালুর কথা বলছেন৷

ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা দিতে এবং নিজেদের অস্ত্রভাণ্ডার পূর্ণ রাখতে ইইউ সরকারগুলো যেন দ্রুত অস্ত্র উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়, সেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন ব্রেতঁ৷

যুদ্ধকালীন অর্থনীতি মানে হচ্ছে, একটি দেশের সরকার তার দেশের পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পরিবর্তন করবে এবং সেই দেশের কারখানাগুলোতে যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য জরুরি ভিত্তিতে উৎপাদিত হবে৷

তবে ইইউ কমিশনার ব্রেতঁর সঙ্গে একমত নন পোল্যান্ডে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত টমাস বাগার৷ ‘যুদ্ধ অর্থনীতি' বিষয়ে জার্মানিতে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে না বলে জানান তিনি৷

এদিকে, সেন্টার ফর ইউরোপিয়ান পলিসি অ্যানালিসিসের এডওয়ার্ড লুকাস ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘যুদ্ধ অর্থনীতি' পরিভাষার অর্থ একেক দেশে একেক রকম৷ ‘‘যুদ্ধ অর্থনীতির আসল অর্থ হচ্ছে, মানুষ বন্দুক নিয়ে আপনার কারখানা দখল করে সেখানে আরও বন্দুক তৈরি করবে৷ আমার মনে হয় না ইউরোপের কেউ এমন পরামর্শ দিচ্ছে,'' বলেন তিনি৷

তবে রাশিয়া ইতিমধ্যে এটি শুরু করেছে বলেও জানান লুকাস৷ তিনি বলেন, জার্মানির ক্ষেত্রে বিষয়টি (যুদ্ধ অর্থনীতি) নাৎসি আমলে অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার সময়টা সামনে নিয়ে আসবে- যে সময়টায় অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছিল এবং ক্রীতদাস শ্রমিকেরা নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন৷

জার্মান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের বেন তালিস বলছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ যুদ্ধ অর্থনীতির কথা বলেছেন৷ কিন্তু তারপর সেটি বাস্তবায়নে তাকে নাটকীয় পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি৷ ‘‘এর (যুদ্ধ অর্থনীতি) অনেক প্রভাব থাকবে,'' বলেন তিনি৷ যেমন ‘‘অর্থনীতির উপর অনেক বেশি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ থাকবে৷ এটা সম্ভবত অন্যরকমের রেশন ব্যবস্থা চালুর কথা বোঝাবে, যা ইউরোপীয়দের মধ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ সংকেত পাঠাবে৷ আমার মনে হয় না, পশ্চিম ইউরোপের বর্তমান প্রজন্মের রাজনীতিবিদরা তেমনটা চাইবেন৷''

এস্তোনিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হানো পেভকুর বলছেন, তার দেশ ইতিমধ্যে ইউক্রেনকে সহায়তা হিসেবে জিডিপির এক শতাংশ খরচ করেছে৷ এর জন্য তার দেশে ‘যুদ্ধ অর্থনীতি' চালুর প্রয়োজন পড়েনি বলে ডয়চে ভেলেকে জানান তিনি৷ পেভকুর বলেন, ‘‘আমাদের সেটা বিশেষ করে উল্লেখ করতে হবে না৷ আমরা হুমকি দেখতে পাচ্ছি এবং আমরা বলছি যে, ইউরোপের সবাইকে বুঝতে হবে, রাশিয়া আমাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি৷''

সামরিক ইতিহাসবিদ ও পোলিশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক স্লাভোমির ডেবস্কি ‘যুদ্ধ অর্থনীতির' প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করেন৷ তবে এখনও এর সময় আসেনি বলে ডয়চে ভেলেকে জানান তিনি৷ তার সন্দেহ, রাজনীতিবিদেরা যখন যুদ্ধ অর্থনীতির কথা বলেন তখন তারা সম্ভবত জানেন না যে, আসলে কী বলছেন৷ ‘‘১৯৪২ সালে যুক্তরাষ্ট্র মাত্র ১৪ দিনে (দুই বছরের বদলে) বড় জাহাজ তৈরি করতে সমর্থ হয়ে উঠেছিল৷ যুদ্ধ অর্থনীতি বিষয়টা এমনই৷ আমরা এখনও সেই পর্যায়ে পৌঁছাইনি এবং আমাদের অর্থনীতিতে এমন অর্থনীতি চালু করার কোনো প্রয়োজন নেই,'' বলেন ডেবস্কি৷

টেরি শুলৎস/জেডএইচ