মাস্ক ‘ছিনতাই’ করছে অ্যামেরিকা!
৪ এপ্রিল ২০২০এসব মাস্কের দাম আগেই পরিশোধ করে দেয়া হয়েছে৷ কিন্তু তারপরও মার্কিন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সেগুলো জব্দ করার অভিযোগ এনেছে বার্লিন৷ এমন কর্মকাণ্ডকে ‘আধুনিক যুগের দস্যুতা' বলেও প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন জার্মান কর্মকর্তারা৷
বার্লিনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেয়াস গাইসেল বলেছেন, বার্লিনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া দুই লাখ মাস্কের একটি চালান ব্যাংককে আটকে দিয়েছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ৷ করোনা সংকটের মধ্যেও কাজ চালিয়ে যাওয়া বার্লিন রাজ্য পুলিশ সদস্যদের জন্য এফএফপি-টু ক্লাসের এইসব মাস্ক অর্ডার দেয়া হয়েছিল৷
রাজনৈতিক দল এসপিডির সংসদীয় গ্রুপের চেয়ারম্যান রোল্ফ ম্যুৎসেনিশ মাস্ক ‘জব্দের' ঘটনাকে ‘বেআইনী' আখ্যা দিয়ে এর ব্যাখ্যা দাবি করেছেন৷ ডয়চে ম্যুৎসেনিশ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সুরক্ষা মাস্ক সংগ্রহ করার সময় অবৈধ পন্থা অবলম্বন করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ অংশীদারদের ক্ষেত্রেও বিশেষভাবে এ কথা সত্যি, এমনকি তাদের নিজেদের সরবরাহে সংকট থাকলেও৷ যদি যা শোনা যাচ্ছে তা সত্যি হয়, ফেডারেল সরকারের অবশ্যই উচিত হবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া৷''
গাইসেল জানিয়েছেন বার্লিন এই মাস্কগুলো একটি মার্কিন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কিনেছে৷ তবে জার্মানির টাগেসশ্পিগেল পত্রিকা জানিয়েছে এগুলো উৎপাদন করা হয়েছে চীনে৷ গাইসেলও ফেডারেল সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে চলতে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ প্রয়োগের৷
নানা ধরনের মাস্কের সঠিক ব্যবহার জানতে দেখুন নীচের ভিডিওটি
অ্যামেরিকান মাস্ক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান থ্রিএম অবশ্য জার্মানির এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷ জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএকে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের জানা নেই৷
ফ্রান্স এবং ক্যানাডাও তীব্র সমালোচনা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন কর্মকাণ্ডের৷ ফ্রান্সের সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত অঞ্চল ইল দ্য ফঁস এর প্রেসিডেন্ট ভালেরি পেক্রোঁস বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, শেষ মুহূর্তে বেশি দাম দিয়ে ফ্রান্সের জন্য প্রস্তুত করা মাস্ক যুক্তরাষ্ট্র কিনে নিয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘অ্যামেরিকানরা অনেক বেশি দাম দিচ্ছে, ফলে পৃথিবীর এই দুর্দশার সময়েও কেউ কেউ বেশি টাকা কামানোর লোভ সামলাতে পারছে না৷''
ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও একই ধরনের ঘটনায় ‘উদ্বেগ' প্রকাশ করেছেন৷ ক্যানাডার অর্ডার করা মাস্ক এসে পৌঁছেছে, তবে তা অর্ডার দেয়া সংখ্যার তুলনায় অনেক কম৷ তিনি অভিযোগ করেন, ‘বেশি দাম' দিয়ে ‘কেউ একজন' বাকি মাস্ক কিনে নিয়ে গেছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা বুঝতে পারছি অ্যামেরিকার প্রয়োজন অনেক বেশি, কিন্তু ক্যানাডারও একই অবস্থা৷ ফলে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে৷''
করোনা সংক্রমণের ফলে বেশিরভাগ দেশই লাখ লাখ মাস্কের প্রয়োজন নিজেদের উৎপাদন দিয়ে মেটাতে পারছে না৷ ফলে মাস্ক ও অন্যান্য মেডিক্যাল সুরক্ষা সরঞ্জামের জন্য বেশিরভাগ দেশকেই চীন ও এশিয়ার অন্যান্য দেশের শরণাপন্ন হতে হয়েছে৷
এডিকে/এফএস (এএফপি, ডিপিএ)