ইটালিতেও বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ক্ষমতা বিস্তারের রাজনীতি!
১৮ জুলাই ২০২০এই দ্বন্দ্ব সংঘাতে কখনো কখনো হয়রানির শিকার হন সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা৷ ইটালিতে সরেজমিন প্রতিবেদন তৈরির সময় এমনসব অভিযোগ পেয়েছেন ডয়চে ভেলের খালেদ মুহিউদ্দীন ও আরাফাতুল ইসলাম৷ এ বিষয়ে দুই রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তারা৷
ইটালিতে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির বিষয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা গণমাধ্যমে নেতিবাচক তথ্য দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের৷ তবে এসব কথা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেন সেখানে বিএনপির সভাপতি মো. তাইফুর রহমান ছোটন৷ সম্প্রতি তিনি নিজেও ইটালির গণমাধ্যমে কিছু বক্তব্য দিয়েছেন, যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে৷
এ বিষয়ে ছোটন বলেন, ‘‘আমি ইটালির গণমাধ্যমে এই কথাটি বলেছি যে বাংলাদেশের নাগরিকদের যে ফেরত পাঠানো হল তাদের জাহান্নামে ফেরত পাঠানো হল৷ এই কথাটি গণমাধ্যমে হিট করেছে৷ ইটালির সীমান্ত থেকে তাদের কেন ফেরত পাঠানো হল আমি সেজন্যে এই কথা বলেছি৷ কারণ বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি এখন অনেকটা উদ্বেগজনক৷ ইটালিতে মার্চ মাসে করোনা পরিস্থিতি যেমন উপরের দিকে ছিল বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতিও এখন তেমন৷ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে৷ সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নাই৷ কোন কিছুর নিশ্চয়তা নাই৷''
তিনিসহ অনেকেরই অভিযোগ, ইটালিতে বাংলাদেশ দূতাবাস সেখানকার আওয়ামী লীগের একটি অংশের কর্মীদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়৷ তাদের সহযোগিতা ছাড়া নিয়মিত কোন সেবা পাওয়া যায় না৷ এর কারণে প্রবাসীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন৷ তবে বিষয়টি অস্বীকার করেন ইটালি আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইদ্রিস ফরাজী৷ তিনি বলেন, ‘‘কোন ব্যক্তি বা দলের মাধ্যমে দূতাবাসের কার্যকলাপ হয়েছে এমন প্রমাণ হলে আমরা ব্যবস্থা নিব৷''
দূতাবাস নিয়ে অবশ্য আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যেই দ্বন্দ্ব রয়েছে৷ এক পক্ষ রাষ্ট্রদূতের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের পক্ষে৷ অন্যপক্ষ তার বিরুদ্ধে, দূতাবাসের কার্যক্রম আর রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে অনেক অভিযোগ তাদের৷ এই গ্রুপগুলোর মধ্যে বিভক্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দূতাবাসের সামনেও বিভিন্ন সময়ে তারা এক অন্যের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে থাকেন৷ অভিযোগ আছে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে সামনে রেখে একাধিক গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের এই রাজনীতি শুরু হয়েছে সেখানে৷
এ নিয়ে ইটালি ও ইউরোপের আওয়ামী লীগ নেতা কে এম লোকমান হোসেন বলেন, দূতাবাস, রাষ্ট্রদূত নিয়ে অনেকে সত্য চিত্র তুলে ধরার কারণেই বিষয়টিকে দোলীয় কোন্দল হিসেবে দেখিয়ে অনেকে পার পেতে চাচ্ছে৷ তার দাবি, অ্যাপয়েন্টমেন্ট ব্যবস্থার কারণে দূতাবাসে হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা৷ এজন্য এই ব্যবস্থা তুলে দেয়ার পক্ষে তারা৷ অন্যদিকে উলটোটা মনে করেন মো. ইদ্রিস ফরাজী৷ তার দাবি অ্যাপয়েন্টমেন্ট ব্যবস্থা চালুর পর হয়রানি কমেছে৷ এর মাধ্যমে তারা দূতাবাসের সেবা কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছেন এমন তথ্য মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি তার৷
বিএনপির মো. তাইফুর রহমান ছোটন বলেন, রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত ইটালি প্রবাসীর একটি প্লাটফর্মে নিয়ে আসার উদ্যোগ নিতে চান তারা৷ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগেরই একটি অংশ তারা কখনও চান না আমরা সবাই সামাজিকভাবে একটা প্লাটফর্মে আসি৷’’
এফএস/জেডএ