জলবায়ু সম্মেলন
২৫ নভেম্বর ২০১৩প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশ্ব নেতারা নতুন একটা চুক্তিতে পৌঁছাবেন – এমনই লক্ষ্য ছিল জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দেয়া প্রতিনিধিদের৷ কিন্তু এতটা না হলেও বন উজাড় রোধে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে সমর্থ হয়েছেন প্রতিনিধিরা৷ এজন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর সরকার ও সংস্থাগুলোকে অর্থ সহায়তা দেয়া হবে৷ কেননা বনভূমিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা গেলে কমবে কার্বন নিঃসরণ, কমবে বৈশ্বিক উষ্ণতাও৷
এই চুক্তিকে একটি মাইলফলক হিসেবে দেখছেন ব্রিটিশ জ্বালানিমন্ত্রী এড ডেভি৷ এই নতুন চুক্তি অনুযায়ী,ত গ্রিন ক্লাইমেট তহবিল বিভিন্ন প্রকল্পে সহায়তা করবে৷ কার্বন নিঃসরণ রোধে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হিসেবে এরই মধ্যে নরওয়ে সরকার ব্রাজিল, গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো এবং ইন্দোনেশিয়াকে ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছে৷
বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বুধবার সম্মেলনে আলোচনা হয় রাতভর৷ কিন্তু কোনো চুক্তি না হওয়ায় ১৩টি বেসরকারি পরিবেশ সংগঠনের ৮০০ প্রতিনিধি সম্মেলন থেকে বেরিয়ে যান৷ অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক উইনি বাইআনইমা আইপিএস-কে বলেছেন, তাঁরা আলোচনা থেকে বেরিয়ে গেছেন কারণ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো নিয়ে সেখানে কোন আলোচনাই হয়নি৷ তাঁদের মতে, ১১ নভেম্বর শুরু হওয়া এই সম্মেলনে গত কয়েকদিনে আলোচনায় কোনো অগ্রগতিই হয়নি৷
সম্মেলনে ১৯৫টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছিলেন৷ কয়লা, তেল ও গ্যাস পুড়িয়ে কার্বন নির্গমন ২০১৫ সালের মধ্যে কমিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা কমানোর লক্ষ্যেই জাতিসংঘের এই সম্মেলনে আলোচনা হয়৷
বর্তমানে যে হারে কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে তাতে খুব শিগগিরই বৈশ্বিক তাপমাত্রা চার ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা৷ বলছেন, এর ফলে ঝড়, খরা, বন্যা-র মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বেড়ে যাবে, তেমনি অনেক বেড়ে যাবে সাগরের পানির উচ্চতা৷
সম্মেলনে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ব্যাপারে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি৷ উন্নয়নশীল দেশগুলোর দাবি, উন্নত দেশগুলোকে বেশি পরিমাণে কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে৷ চীন বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে কার্বন নিঃসরণ করে৷ এরপর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলো রয়েছে, আর ভারতের অবস্থান চতুর্থ৷
অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলার জন্য উন্নত দেশগুলো তাদের শিল্প-কারখানার উৎপাদন বাড়াতে আগ্রহী, যে কারণে বাড়ছে কার্বন নির্গমন৷ আলোচনায় ২০২০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি একটি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করার কথা ছিল৷ কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, এ ব্যাপারে ২০১৫ সালের প্রথম দিকে তাদের পরিকল্পনা জানাবে৷
সম্মেলনের শেষ দিন একটি খসড়া প্রস্তাব ইস্যু করা হয়, যেখানে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে পেরুর রাজধানী লিমায় জলবায়ু সম্মেলনে কি কি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে তা ঠিক করা হয়েছে৷
এপিবি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স, আইপিএস)