ইন্টারনেট সেন্সরশিপের শিকার আরেকটি গণমাধ্যম
২১ মে ২০১৯বাংলাদেশের প্রথম সারির অনলাইন গণমাধ্যমগুলোর একটি পরিবর্তন ডটকম-এর ওয়েবসাইট ব্লক করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সরকারের বিরুদ্ধে৷ রোববার থেকে সাইটটিতে ঢুকতে পারছেন না দেশের ব্যবহারকারীরা৷ বিষয়টি এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন সংবাদ মাধ্যমটির ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আবু সুফিয়ান৷
এই প্রতিবেদন লেখার সময় জার্মানি থেকে ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করা যাচ্ছিল৷ বিদেশ থেকে সাইটটিতে ঢুকতে পারার কথা ফেসবুকে একটি পোস্টে জানিয়েছেন ডয়চে ভেলের পাঠকেরাও৷ তবে বাংলাদেশ থেকে পরিবর্তন ডটকমের সাইটে প্রবেশ করা যাচ্ছে না বলে নিশ্চিত করেছেন বেশিরভাগ পাঠক৷
সরকারের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলো পরিবর্তন ডটকম বন্ধের বিষয়ে কিছু জানে না বলে এএফপির কাছে দাবি করেছে৷ তবে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থাটি দাবি করছে, জঙ্গিবাদবিরোধী সাম্প্রতিক একটি বিজ্ঞাপনের অর্থায়ন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পরই নিরাপত্তা সংস্থা সাইটটি ব্লক করার নির্দেশনা দিয়েছে৷
সম্প্রতি ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ' নামের একটি সংগঠন বিভিন্ন সংবাদপত্রে একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে৷ এতে ইসলামী জঙ্গি শনাক্তকরণের ২৩ টি উপায় উল্লেখ করা হয়৷ সেগুলোর কয়েকটি নিযে ব্যাপক সমালোচনা হয়৷ ইসলামী সংগঠনগুলোও এর প্রতিবাদ জানিয়েছে৷
নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে গত কয়েক মাসে ৫৪ টি নিউজ পোর্টাল ও ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিয়েছে সরকার৷ সরকারের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার যোগসাজশে তিনজন ব্যক্তি গুম হওয়ার একটি খবর প্রকাশের পর গত মার্চে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরার সাইটটিতেও বাংলাদেশ থেকে প্রবেশ করা যাচ্ছিল না৷
এদিকে গত কয়েক দিনে সরকার তিনজন অ্যাক্টিভিস্ট ও লেখককে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রপ্তার করেছে৷ কবি হেনরি স্বপন, মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার'-এর কর্মী আব্দুল কাইয়ুম এবং আইনজীবী ও লেখক ইমতিয়াজ মাহমুদকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় ঢাকায় প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন৷
গত বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন স্বপ্নন এবং মাহমুদ, তবে এখনো গ্রেপ্তার রয়েছেন কাইয়ুম৷ এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৃতীয়বারের মতো দেশের ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ক্রমাগত কতৃত্ববাদী আচরণের অভিযোগ উঠছে৷ ভিন্নমত পোষণকারীদের দমনে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করেছে বলেও সমালোচনা রয়েছে৷
সুইডেনভিত্তিক গবেষক ও লেখক তাসনিম খলিল বার্তা সংস্থাটিকে বলেন, বাংলাদেশে চলতি বছর থেকে শুরু হওয়া ইন্টারনেট সেন্সরশিপ ব্যবস্থার সবশেষ শিকার হয়েছে পরিবর্তন ডটকম৷ ‘‘সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা নাখোশ হয়েছে এমন একটি প্রতিবেদনের কারণেই পরিবর্তন ডটকম বন্ধ করা হয়েছে বলে আমাকে নিরাপত্তা সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে'' বলেন ২০০৭ সাল থেকে নির্বাসিত এই সাবেক সংবাদকর্মী৷
এফএস/এসিবি (এএফপি)