ইসরায়েলের গুলিতে নিহত নাবালক
৭ ডিসেম্বর ২০২০জন্মদিনেই ইসরায়েলের নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে মৃত্যুবরণ করতে হলো ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের ১৫ বছরের বালক আলি আবু আলিয়াকে। গত শুক্রবারই ছিল তার জন্মদিন। ওই দিন পাড়ার মোড়ে ইসরায়েলের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ফিলিস্তিনের বিক্ষোভকারীদের সংঘাত দেখতে গিয়েছিল সে। যোগ দিয়েছিল সেই বিক্ষোভে। সেখানেই ইসরায়েলের নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে মৃত্যু হয় তার। এই নিয়ে গত এক বছরে পাঁচজন নাবালককে গুলি করে মারলো ইসরায়েল।
আলি আবু আলিয়ার পরিবার ধার্মিক। কোনো বছরই ছেলের জন্মদিন পালন করেননি তার বাবা-মা। কিন্তু ১৫ বছরের জন্মদিন বিশেষ। তাই বাবা-মা ঠিক করেছিলেন এ বছর ছেলের জন্মদিন পালন করা হবে। মা কেকও বানিয়েছিলেন। গত শুক্রবার বাড়িতে যখন জন্মদিনের প্রস্তুতি চলছে, তখনই রাজধানী শহরের অদূরে আলির পাড়ার মোড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই এমন বিক্ষোভ চলে। এ দিন বিক্ষোভ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর আলি তা দেখতে যায়। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই নিরাপত্তারক্ষীরা বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি চালাতে শুরু করে। আলি তলপেটে গুলি লাগে।
বিক্ষোভকারীরাই আলিকে নিয়ে যান স্থানীয় হাসপাতালে। সেখানে সামান্য চিকিৎসার পরেই আলির মৃত্যু হয়। শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা এলাকায়। আলির মা খবর পেয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়েন। আলির বাবা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এরপর তাঁদের জীবনের আর কোনো মানে থাকল না।
ফিলিস্তিনে দীর্ঘদিন ধরে শিশু এবং কিশোরদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে ডিফেন্স ফর চিলড্রেনস ইনট্যারন্যাশনাল প্যালেস্তাইন। তাদের বক্তব্য, গত এক বছরে এই নিয়ে পাঁচজন নাবালককে গুলি করে মারল ইসরায়েলের নিরাপত্তারক্ষীরা। তার আগের বছরে সংখ্যাটি আরো বেশি ছিল।
অধিকাররক্ষী সংগঠনগুলির বক্তব্য, গোটা বিশ্বেই নাবালকদের জন্য বিশেষ আইন আছে। তাদেরকে এ ভাবে হত্যা করা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। কিন্তু ইসরায়েল এ সব কিছুর তোয়াক্কা করে না। একাধিকবার তাদের গুলিতে নাবালকদের মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলে তা নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না।
বস্তুত, আলির মৃত্যুর পর স্থানীয় মানুষেরা জানিয়েছেন, প্রায় প্রতি সপ্তাহেই ওই এলাকায় ইসরায়েলের নিরাপত্তরক্ষীদের সঙ্গে এলাকার মানুষের সংঘাত হয়। এর আগে নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে পাথরও মারা হয়েছে। তবে তাঁদের দাবি, শুক্রবারের বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স)