সম্ভাব্য বৈঠকের আগে ট্রাম্প-কিম স্নায়ুযুদ্ধ
২৩ মে ২০১৮ওয়াশিংটনে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন-এর সঙ্গে আলোচনার পর ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার সদিচ্ছা সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করেন৷ অদূর ভবিষ্যতে সে দেশ পরমাণু কর্মসূচি ত্যাগ করতে প্রস্তুত কিনা, সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে৷ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এই শীর্ষ বৈঠক এই মুহূর্তে অনুষ্ঠিত না হবার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে এবং এমনটা হতেই পারে৷ এখনই সম্ভব না হলেও ভবিষ্যতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে৷ সেই সম্ভাবনা যথেষ্ট উজ্জ্বল বলে মনে করেন ট্রাম্প৷ শীঘ্রই বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়ে যাবে৷ ট্রাম্প অত্যন্ত সংযত ভঙ্গিতে উত্তর কোরিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, সে দেশ ‘গ্রেট কান্ট্রি' বা মহান দেশ হয়ে উঠতে পারে৷ তাদের এই সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়৷
বহু প্রত্যাশিত শীর্ষ বৈঠক সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করে ট্রাম্প প্রশাসন সত্যি হাল ছেড়ে দিচ্ছে, নাকি নমনীয় হবার জন্য উত্তর কোরিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, তা স্পষ্ট নয়৷ উত্তর কোরিয়ার তর্জনগর্জন সত্ত্বেও ট্রাম্প যে কোনো মূল্যে বৈঠক করতে চান, এমন ধারণা তিনি সৃষ্টি করতে চান না৷
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটন সফরের পরিকল্পনা করেছিলেন৷ কিন্তু গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়া শীর্ষ বৈঠক বাতিল করার হুমকি দেওয়ায় আপাতত তাঁকে সংকট সামলাতে হচ্ছে৷ মুন মনে করেন, উত্তর কোরিয়া আন্তরিকভাবে এই বৈঠক সম্ভব করতে চায়৷ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে কট্টরপন্থিদের সঙ্গেও সরাসরি আলোচনা করে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছেন৷ ট্রাম্প-এর সঙ্গে বৈঠকের আগে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন-এর সঙ্গে সংলাপে ট্রাম্প-কিম বৈঠকের দ্রুত প্রস্তুতির আর্জি জানান৷ উত্তর কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা চুং এউই ইয়ং বলেন, এখনো শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবার ৯৯.৯ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে৷
ওয়াশিংটনের সংশয় সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া উত্তেজনা কমাতে সদিচ্ছা দেখিয়ে চলেছে৷ অ্যামেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সামরিক মহড়ার কড়া নিন্দা করে সে দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিলেও মহড়া শেষ হবার পর সংলাপ শুরু করার ইঙ্গিত দিয়েছে৷ দক্ষিণ কোরিয়ার এক সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন, আগামী ২৫শে মে-র পর এই সংলাপ শুরু হবার সম্ভাবনা রয়েছে৷
পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার অবকাঠামো ধ্বংস করার ঘোষণার ক্ষেত্রেও অবিচল রয়েছে পিয়ং ইয়ং৷ বুধবার বিদেশি সাংবাদিকদের একটি পরীক্ষাস্থল পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ বুধবার ও শুক্রবারের মধ্যে সেই সাইট ধ্বংস করা হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে৷ অ্যামেরিকার সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের আগে রাজনৈতিক সদিচ্ছার পরিচয় হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করছে উত্তর কোরিয়া৷ উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়ায় মোট ৬টি পরমাণু পরীক্ষাস্থল রয়েছে৷ তাই একটি সাইট ধ্বংস করলে ভবিষ্যতে পরমাণু পরীক্ষার ক্ষমতা খর্ব হবে কিনা, তা নিয়ে অনেক বিশেষজ্ঞ সংশয় প্রকাশ করেছেন৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)