1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উৎকণ্ঠায় বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা

সমীর কুমার দে ঢাকা
৩ জানুয়ারি ২০২০

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের এখনও প্রতীক বরাদ্দ হয়নি৷ ফলে এখনও প্রচারে মাঠে নামতে পারেননি তারা৷ কিন্তু মাঠে নামার আগেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন পার করছেন বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা৷

https://p.dw.com/p/3Vgpf
Bangladesch Wahlen bei der Dhaka North City Corporation
ছবি: bdnews24.com

গত বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির সমর্থনে কাউন্সিলর প্রার্থী তাজউদ্দিন আহমেদ তাজু গ্রেফতার হয়েছেন৷ তিনি বিএনপির বংশাল থানার সভাপতি৷ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাইয়ের পর এলাকায় ফেরার সময় বিকেলে তাজুকে মতিঝিলের ইত্তেফাক মোড় থেকে গ্রেপ্তার করে বংশাল থানা পুলিশ৷

বংশাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীন ফকির ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তাজুর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে এবং কয়েকটিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে৷ সেই পরোয়ানার ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷'' নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করতে হলে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি লাগে কিনা জানতে চাইলে শাহীন ফকির বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এমন কোন নির্দেশনা আসেনি৷ আমি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়েই তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছি৷''

বিএনপি থেকে যারা কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন তাদের অধিকাংশের বিরুদ্ধেই মামলা আছে৷ কেউ জামিনে আছেন, কেউ পলাতক৷ এদের অনেকেই আবার নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন৷ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আট নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদ মিষ্টি৷ তিনি বিএনপির ঢাকা মহানগরের (উত্তর) সহ-সভাপতি৷ ডয়চে ভেলেকে মিষ্টি বলেন, ‘‘আমাদের সবার বিরুদ্ধেই মামলা আছে৷ আমার বিরুদ্ধেও আছে৷ আসলে আমরা সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছি৷ কতদিন এলাকায় থেকে জনগনের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে পারব জানি না৷ তবে এখন পর্যন্ত এলাকায় আছি, প্রতীক পেলে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছি৷ এখনতো শুনছি, এখানে তালিকা হচ্ছে৷ ফলে উদ্বেগ আর উৎন্ঠার মধ্যে আছি যে শেষ পর্যন্ত কী হয়৷''

ফেরদৌস আহমেদ মিষ্টি

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে ১০৯টি ওয়ার্ড রয়েছে৷ এর মধ্যে দক্ষিণে ৭৫টি ও উত্তরে ৫৪টি৷ এছাড়া সংরক্ষিত ৪৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫টি দক্ষিণে এবং ১৮টি উত্তরে৷ এসব ওয়ার্ডে সরাসরি নির্বাচন হচ্ছে৷ অধিকাংশ আসনেই বিএনপি প্রার্থী দিয়েছে৷ যেখানে বিএনপির প্রার্থী নেই সেখানে স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি৷ 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির মনোনয়নে আবারও প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর আব্দুল কাদির৷ তিনি গেন্ডারিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো আছে তার সবগুলোতেই জামিন নিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি৷ এখন আবার কোন মামলায় কিভাবে জড়ানো হবে জানি না৷ আমাদের দলের সবাই মামলা-গ্রেপ্তার নিয়ে আতঙ্কের মধ্যেই নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন৷''

নির্বাচনে বৈধ প্রার্থী ঘোষণার পর কাউকে গ্রেফতার করতে হলে নিয়ম কী? জানতে চাইলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. সাখাওয়াত হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এবারতো এখনও নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্কা দেখছি না৷ শত শত, হাজার হাজার সমর্থক নিয়ে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেখলাম৷ এটাতো আচরণবিধির লঙ্ঘন৷ পাশাপাশি শুধু মার্ডার কেসে আদালতের ওয়ারেন্ট থাকলে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে৷ তবে অবশ্যই নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করে নিতে হবে৷ এখন ধরেন বিএনপির সবার বিরুদ্ধেই মামলা আছে৷ বিভিন্ন ধরনের মামলা৷ পুলিশ যদি এখন গ্রেফতার শুরু করে তাহলেতো কেউ নির্বাচনই করতে পারবে না৷ প্রার্থীদের সুরক্ষা দেওয়া কমিশনের দায়িত্ব৷ এখন তারা যদি সেটা না করেন তাহলে কিভাবে ফেয়ার ইলেকশন করবেন আমি তো বুঝতে পারছি না৷'

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. সাখাওয়াত হোসেন

এদিকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে যে আয়োজন চলছে, তা ‘লোক দেখানো' বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ৷ শুক্রবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘‘আমি বলব এটা একটা লোক দেখানো নির্বাচন৷ হৈচৈ হবে, মিছিল-টিছিল হবে, টেলিভিশনে আপনারা মিছিলও দেখবেন, সবাই স্লোগান-ট্লোগান দেবেন৷ নির্বাচনের দুই দিন আগে দেখবেন সব ঠান্ডা৷''

এই সংশয়ের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ‘‘গতকাল আমাদের একজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে ধরে নিয়ে গেছে৷ একদিকে গ্রেপ্তার চলছে, ভয়-ভীতি-আতঙ্ক চলছে, অন্যদিকে নির্বাচনী প্রচার চলছে৷ এগুলো লোক দেখানো৷ এই নির্বাচন গণতন্ত্রের প্রহসন ছাড়া অন্য কিছু না৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য