ওষুধ নয়, ঘুম পাড়াবে জুঁই অথবা বেলি ফুল
১১ আগস্ট ২০১০‘দ্য জার্নাল অব বায়োলজিক্যাল কেমিষ্ট্রি’র অনলাইনে বলা হয়েছে, গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমের যেকোনো ওষুধ কিংবা ভ্যালিয়াম যেভাবে কাজ করে জুঁই অথবা বেলি ফুলের সুগন্ধও এইকভাবে স্নায়ুতে এনে দেয় প্রশান্তি৷ যা মানুষের চোখে ঘুম নামিয়ে আনতে সাহায্য করে৷
বাজারজাত ওষুধগুলোর চেয়ে প্রাকৃতিক এই উপাদানটিই বেশি কার্যকরী বলে দাবি করছেন জার্মান গবেষকরা৷
জার্মানির ড্যুসেলডর্ফ শহরের হাইনরিস হাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ওলগা জেরগেভা ও অধ্যাপক হেলমুট হাস এবং বোখুমের রুঢ় বিশ্ববিদ্যালয় বা আরইউবি-এর গবেষকরা একযোগে এই গবেষণাটি চালান৷ গবেষকদের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন অধ্যাপক হানজ হাটে৷ তাঁরা আবিষ্কার করেছেন, ঘুমের ওষুধের যে উপাদানটি মানুষকে প্রশান্তি এনে দেয় জুঁই অথবা বেলি ফুলের সুগন্ধের মধ্যেও একই ধরণের উপাদান রয়েছে৷
গবেষকরা এ নিয়ে বিশদ আকারে গবেষণা করেন৷ প্রায় ১০০ ধরণের সৌরভ নিয়ে মানুষ ও ইঁদুরের ওপর চালানো হয় গবেষণা৷ এরমধ্যে এমন দু'টি সৌরভ খুঁজে পান তাঁরা, যেগুলোতে এমন উপাদান রয়েছে যা কিনা বাজারে প্রচলিত ঘুমের ওষুধের মতোই শক্তিশালী৷ বিজ্ঞানীরা বিষয়টিকে এভাবে ব্যাখ্যা করেন, শ্বাস নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সুগন্ধ ফুসফুস থেকে রক্তে যায় এবং সেখান থেকে মস্তিষ্কে যায়৷ এই সুগন্ধ মস্তিষ্কে প্রশান্তি এনে চোখে ঘুম নিয়ে আসে৷
শুধু ঘুমের জন্যই নয়, স্নায়ুবিক উত্তেজনা প্রশমনের জন্যও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়৷ পশ্চিমা বিশ্বের শতকরা ২০ ভাগ মানুষ প্রতিদিন না হলেও মাঝে মাঝে ঘুমের ওষুধ খান৷ আর বিশ্বের মধ্যে এখনও পর্যন্ত বহুল প্রচলিত ঘুমের ওষুধগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে বেনজোডায়াজেপিনেস৷ এ ওষুধটি মানুষকে ধীরে ধীরে আসক্ত করে ফেলে৷ সেইসঙ্গে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা যায় বিষন্নতা, চোখে অন্ধকার দেখা, উৎকন্ঠা, মাংসপেশীর দুর্বলতা ইত্যাদি সমস্যা৷ অন্যদিকে প্রকৃতিগতভাবেই জুঁই বা বেলি ফুলের ঘুম পাড়ানোর ক্ষমতা থাকলেও এর কিন্তু কোনরকমই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ