স্নোডেনকে নিয়ে জটিলতা
৫ নভেম্বর ২০১৩অবশেষে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এনএসএ-কে ‘শায়েস্তা' করার একটা পথ খুঁজে পেয়েছিলেন জার্মানির কিছু মানুষ৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে টেলিফোন করে জার্মান চ্যান্সেলর ম্যার্কেল তেমন সুবিধা করে উঠতে পারেননি৷ অতীতে সরাসরি তাঁর টেলিফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল কিনা, তার স্পষ্ট সদুত্তরও পাওয়া যায়নি৷ বিভিন্ন স্তরে এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে৷ জার্মানিতে এমনকি রক্ষণশীল ও অ্যামেরিকার ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে পরিচিত নেতাদের কণ্ঠেও কড়া সুর শোনা যাচ্ছে৷
এরই মধ্যে সবুজ দলের সাংসদ ক্রিস্টিয়ান স্ট্র্যোবেলে মস্কোয় গিয়ে খোদ এডওয়ার্ড স্নোডেনের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন৷ জার্মান সংসদের যে কমিটি আড়ি পাতার অভিযোগের তদন্ত করছে, সেই কমিটির সামনে হাজির হতে রাজি হয়েছেন স্নোডেন৷ তবে অবশ্যই তাঁর নিরাপত্তার দিকটাও দেখতে হবে৷ জার্মানি থেকে তাঁকে অ্যামেরিকায় প্রত্যর্পণ করা চলবে না৷ পূর্ণ নিরাপত্তার সঙ্গে জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টিও আলোচিত হচ্ছে৷ বিরোধী সবুজ ও বাম দল এই দাবি জানাচ্ছে৷ এমনকি সংসদে প্রস্তাব এনে তারা সরকারকে এই কাজে বাধ্য করার কথাও ভাবছে৷
বিকল্প প্রস্তাব হলো, জার্মান কমিটির সাংসদরা মস্কো গিয়ে স্নোডেনের সঙ্গে কথা বলবেন৷ অথবা সরাসরি মস্কো থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমেও স্নোডেন কথা বলতে পারেন৷ ভবিষ্যৎ জোট সরকারের শরিক দুই দল আপাতত এই পথেই যেতে চায়৷
এখন সমস্যা হলো, ম্যার্কেল তথা জার্মান নাগরিকদের টেলিফোনে আড়ি পাতার অভিযোগকে কেন্দ্র করে অ্যামেরিকা আপাতত বেশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ঠিকই, কিন্তু স্নোডেনকে খাতির করার প্রশ্নে ওয়াশিংটন একটানা বেশ কড়া মনোভাব নিয়ে আসছে৷ ফলে সরাসরি ওবামা প্রশাসনকে চটাতে চাইছে না বার্লিন৷ ম্যার্কেল-এর বিদায়ী সরকার ও আগামী জোটের সম্ভাব্য শরিক সামাজিক গণতন্ত্রীরাও সতর্ক অবস্থান নিতে চাইছে৷ সোমবার এক সরকারি মুখপাত্র বলেছেন, জার্মানির কাছে ট্রান্স-অ্যাটলান্টিক জোটের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে৷ অ্যামেরিকার সঙ্গে বন্ধুত্বের ফলে জার্মানি ছাড়া সম্ভবত অন্য কোনো দেশ এত উপকার পায়নি৷ এসপিডি দলের এক নেতাও বলেছেন, তাঁরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অবনতি চান না৷
অ্যামেরিকাকে না চটানোর পেছনে আরও কারণ রয়েছে৷ আড়ি-পাতা কেলেঙ্কারিকে কেন্দ্র করে বার্লিন ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সংলাপও চলছে৷ এই মুহূর্তে জার্মানির অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার দুই প্রধান ওয়াশিংটনে৷ দুই দেশের মধ্যে ‘নো-স্পাইয়িং' চুক্তির কথাও শোনা যাচ্ছে৷ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটা গ্রহণযোগ্য সমাধানসূত্র সম্ভব হলে সংঘাত এড়িয়ে চলাই বিচক্ষণতার কাজ হবে, এমনটা বলছেন অনেক বিশেষজ্ঞ৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, রয়টার্স)