করোনাকালে ভার্চুয়াল ভ্রমণের রমরমা
২২ জুলাই ২০২০করোনা ভাইরাস প্রায় গোটা বিশ্বেকে কবজা করার পর ভ্রমণের ইচ্ছা শুধু যেন স্বপ্নই হয়ে উঠেছিল৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অনেক দেশ নিজস্ব সীমান্ত বন্ধ করেছে৷ দেশের মধ্যেও ভ্রমণের উপর কড়াকড়ি দেখা গেছে৷ প্রায় ২০০ কোটি মানুষকে লকডাউনের ফলে কার্যত গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে৷
শুধু মানুষ নয়, প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ যাত্রীবাহী বিমান আকাশে উড়তে পারেনি৷ বিমান চলাচল ও পর্যটন ক্ষেত্র মারাত্মক ক্ষতির মুখ দেখেছে৷ এমন জরুরি পরিস্থিতিতে অনেক জনপ্রিয় শহর ও অঞ্চল বিনামূল্যে ভার্চুয়াল ভ্রমণের সুযোগ করে দিয়েছে৷ যেমন চীনের প্রাচীর বরাবর হাঁটার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে৷ পেরুর বিখ্যাত মাচু-পিচু পর্বত নিজের মতো করে আবিষ্কার করা যাচ্ছে৷ জর্ডানের পেট্রা দেখে মুগ্ধ হওয়াও সম্ভব৷ অথবা নেদারল্যান্ডসের টিউলিপ বাগানের দৃশ্য উপভোগ করা যাচ্ছে৷
প্রকৃতিপ্রেমীরা অনেক জাতীয় পার্কের রূপ দেখতে পাচ্ছেন৷ ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের বিখ্যাত ইয়োসেমাইট ঘুরে দেখা যাচ্ছে৷ অথবা অস্ট্রিয়ার পাহাড়-পর্বত৷
গোটা বিশ্বের প্রায় ২,৫০০ মিউজিয়াম নিজস্ব ভার্চুয়াল দরজা খুলে দিয়েছে৷ অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় মানুষ বসার ঘর থেকেই মঙ্গলগ্রহে টহল দিতে পারছেন৷ গ্রিস নিজস্ব পর্যটন প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে৷ সেখানে গ্রিসের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে৷ অতিথিরা ভার্চুয়াল জগতে গ্রিসের মানুষের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছেন৷
মানুষ অনলাইন কোর্সে অংশ নিতে পারছেন৷ গান অথবা আঁকা শেখার সুযোগ পাচ্ছেন৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ভার্চুয়াল ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করছেন৷ কোরিয়ায় মেকআপের কৌশল শেখার উপায় রয়েছে৷ মরক্কোয় রান্না শেখার ব্যবস্থাও রয়েছে৷ এমন কোর্সে অংশ নিতে হলে এক থেকে ৫০ ডলার পর্যন্ত গুনতে হতে পারে৷ অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, করোনা সংকট শেষ হবার পরেও ভার্চুয়াল ভ্রমণের এই প্রবণতা চালু থাকবে৷
ভবিষ্যতে পর্যটন আরও বেশি করে স্থানীয় পর্যায়ে এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন হবে বলে একটা প্রত্যাশা জেগে উঠছে৷ সত্যি এমনটা হলে বিমান সংস্থাগুলি মোটেই খুশি হবে না বটে, তবে জলবায়ুর উপর অবশ্যই ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাবে৷
আনে সোফি ব্রেন্ডিন/এসবি