করোনা মোকাবিলায় কোনো ঢিলেমি চায় না জার্মানি
২৫ জানুয়ারি ২০২২জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা সোমবার জার্মানির করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে বর্তমান বিধিনিয়ম আপাতত চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক গড় সংক্রমণের হার মঙ্গলবার প্রায় ৮৯৫ ছুঁয়েছে৷ গত সপ্তাহের তুলনায় সংক্রমণের হার ৮৬ শতাংশ বেড়ে গেছে৷ শলৎস মনে করিয়ে দেন, যে ইউরোপের অনেক দেশের তুলনায় জার্মানিতে সংক্রমণের গতি অনেক কম৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সংক্রমণের হার বাড়তে থাকবে৷ তারপর ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে৷ ১৬ই ফেব্রুয়ারি চ্যান্সেলর ও মুখ্যমন্ত্রীদের আগামী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবার কথা৷
করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন সংস্করণ রোগীদের তেমন কাবু করতে না পারলেও রেকর্ড সংক্রমণের কারণে অনেক ক্ষেত্রে কর্মীর অভাব দেখা দিচ্ছে৷ তাছাড়া সুযোগ সত্ত্বেও করোনা টিকা না নেওয়া অনেক মানুষ গুরুতর অসুস্থ হচ্ছেন৷ বর্তমানে সংক্রমণের বেড়ে চলা হারের কারণে সীমিত সংখ্যক মানুষের জন্য পিসিআর টেস্ট সম্ভব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ হাসপাতালগুলির উপর চাপ আরও বাড়লে সরকার আরও কড়া পদক্ষেপের পূর্বাভাস দিয়েছে৷ অবশ্য গণস্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর মাত্রাতিরিক্ত চাপের আশঙ্কা দূর হলে চ্যান্সেলর ও মুখ্যমন্ত্রীরা বিধিনিয়ম শিথিল করার আশ্বাসও দিয়েছেন৷
ওলাফ শলৎস বলেন, জার্মানিতে মাত্র ৭৫ শতাংশ মানুষ করোনা টিকার কমপক্ষে প্রথম ডোজ নিয়েছেন, যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য মোটেই যথেষ্ট নয়৷ এই সংখ্যা আরও বাড়াতে তিনি এক বড় মাপের প্রচার অভিযানের ঘোষণা করেন৷ সেইসঙ্গে করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যে সংসদের উদ্যোগে আইন প্রণয়ন করাতে চায় সরকার৷
সরকারের বেশ কিছু সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সমালোচনাও শোনা যাচ্ছে৷ দফতর, দোকানবাজার বা রেস্তোরাঁয় প্রবেশের নিয়ম রাতারাতি বদল করার ফলে নানা সমস্যা দেখা যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলি অভিযোগ করছে৷ তাছাড়া করোনায় আক্রান্ত হলে এতকাল ছয় মাসের জন্য নিরাময়ের স্বীকৃতি পাওয়া যেত৷ সরকার এবার সেই সময়কাল তিন মাসে কমিয়ে আনায় অনেক মহলে অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে৷ করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ সত্ত্বেও জাতীয় স্তরে টিকা নথিকরণের কোনো ব্যবস্থা চালু না করায় বিভ্রান্তির আশঙ্কা করছে বিরোধী ইউনিয়ন শিবির৷ এমনটা না করলে স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে না এবং টিকা না নেওয়া মানুষদের চিহ্নিত করে তাঁদের টিকা নিতে বলা যাবে না বলে বিরোধীরা মনে করছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)