করোনা সংকট সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে জার্মানি
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১জার্মানির সরকার কিছুতেই করোনা সংকট সামলাতে পারছে না, এমন ধারণা দেশের মানুষের মধ্যে বেড়েই চলেছে৷ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দৈনিক সংক্রমণের হার ধারাবাহিক কমতে থাকলেও সেই প্রবণতা আপাতত থমকে গেছে৷ বুধবারের হিসেব অনুযায়ী দৈনিক সংক্রমণের হার ৮,০০৭৷ টিকাদান কর্মসূচিও অত্যন্ত ধীর গতিতে এগোচ্ছে৷ এমনকি ঘোষিত নীতি কার্যকর করতেও হিমসিম খাচ্ছে আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সরকার৷ লকডাউন শিথিল করার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে সারা দেশে বিনামূল্যে দ্রুত করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু করার ঘোষণা করেও আপাতত সেই সিদ্ধান্ত মূলতুবি রাখতে হচ্ছে৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান গত সপ্তাহে বলেছিলেন, ১লা মার্চ থেকে ‘মাস টেস্টিং’-এর উদ্যোগ শুরু হবে৷ কিন্তু মঙ্গলবার এক সরকারি মুখপাত্র বলেন, ৩রা মার্চ চ্যান্সেলর ম্যার্কেল ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আগামী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবার পরই বিনামূল্যে দ্রুত করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হতে পারে৷
এমন ঘোষণার পর সরকারের বিরুদ্ধে আবার সমালোচনার ঝড় উঠেছে৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর যোগ্যতা সম্পর্কেও প্রশ্ন তুলছে বিরোধী পক্ষ৷ অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও লকডাউন শিথিল করার স্পষ্ট রূপরেখার অভাব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন৷ বড় আকারে দ্রুত করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা না করলে দোকানপাট ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা আরও অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে বলে তাঁরা সতর্ক করে দিচ্ছেন৷ সার্বিকভাবে জার্মানির শিল্পজগত অবশ্য সংকট কাটিয়ে উন্নতির আশা করছে৷
ম্যার্কেল মঙ্গলবার দলীয় সংসদ সদস্যদের সামনে বলেন, জার্মানি ইতোমধ্যেই করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে রয়েছে৷ তাই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ধাপে ধাপে লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের আরও ছোঁয়াচে সংস্করণের অনুপাত বেড়ে চলায় পরিস্থিতির দ্রুত অবনতির আশঙ্কা করছেন ম্যার্কেল৷ তাঁর মতে, বার বার লকডাউনের ঘোষণা ও তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ রুদ্ধদ্বার বৈঠক সত্ত্বেও একাধিক সূত্র থেকে চ্যান্সেলরের বক্তব্য প্রকাশ্যে এসেছে৷
এদিকে ইউরোপে অত্যন্ত ধীর গতিতে করোনার টিকার সরবরাহ ও বণ্টনের বিলম্বের ক্ষেত্রে আরও দুঃসংবাদ শোনা যাচ্ছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাড়তি টিকা কেনার উদ্যোগ নিলেও সরবরাহে বার বার বিলম্ব ঘটছে৷ অ্যাস্ট্রাজেনিকা কোম্পানি জানিয়েছে, এপ্রিল থেকে জুন মাসে র মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে যে পরিমাণ টিকা সরবরাহ করার কথা ছিল, তার অর্ধেকও জোগান দেওয়া হয়তো সম্ভব হবে না৷ তবে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঘাটতি পূরণ করার চেষ্টা করছে সেই কোম্পানি৷ এমন অনিশ্চয়তার ফলে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ইইউ দেশগুলির ৭০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কদের টিকা দেবার লক্ষ্যমাত্রাও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে পারে৷ উল্লেখ্য, অ্যাস্ট্রাজেনিকার টিকার কার্যকরিতা ও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নিয়ে ইউরোপে নেতিবাচক ধারণা দানা বাঁধছে৷ এমনকি অনেকে সুযোগ পেয়েও এই টিকা নিচ্ছেন না৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)