সংক্রমণের রেকর্ড মাত্রা পেরোলো জার্মানি
৮ নভেম্বর ২০২১করোনা মহামারির শুরু থেকে জার্মানিতে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়নি৷ প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে দৈনিক সংক্রমণের সাপ্তাহিক গড় হার সোমবার ২০০ পেরিয়ে গেছে৷ অথচ গত বৃহস্পতিবারই সেই হার ছিল প্রায় ১৫৫৷ এমন প্রবণতা চালু থাকলে ভয়াবহ পরিস্থিতির অশনি সংকেত দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷ বিশেষ করে হাসপাতালের উপর বেড়ে চলা চাপ গোটা স্বাস্থ্য পরিষেবা বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে৷
এমন প্রেক্ষাপটে রাজ্য সরকারগুলি প্রমাদ গুনছে৷ ফেডারেল সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে তারা জরুরি ভিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে চায়৷ অথচ এমন উদ্যোগের আইনি ভিত্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৫শে নভেম্বর৷ তার পরেও যাতে রাজ্য সরকারগুলি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে, সেই লক্ষ্যে জার্মানির সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ সরকারের তিন শরিক দল সোমবারই নতুন আইনের খসড়া সংসদে পেশ করছে৷ তিন দিন ধরে বিতর্কের পর বৃহস্পতিবারই সেটি অনুমোদন করা হতে পারে৷ জরুরি পরিস্থিতিতে সরকার গড়ার আগেই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিতে কার্যত বাধ্য হচ্ছে এসপিডি, এফডিপি ও সবুজ দলের ট্রাফিক লাইট জোট৷ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের নেতৃত্বে বিদায়ী সরকার শেষ লগ্নে বড় কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে চায় না বলে এই তিন দলকে কোয়ালিশন গড়ার লক্ষ্যে আলোচনার মধ্যেই সক্রিয় হতে হচ্ছে৷
করোনা সংকট মোকাবিলার প্রশ্নে জার্মানির সম্ভাব্য সরকারের শরিকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে৷ বিশেষ করে উদারপন্থি এফডিপি দল করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করার যে কোনো পদক্ষেপের বিরোধী৷ তাছাড়া গোটা দেশ জুড়ে শুধু টিকাপ্রাপ্ত ও করোনাজয়ীদের জন্য অবাধ প্রবেশাধিকারের দাবিও মানতে চায় না এই তিন দল৷ তবে সবার জন্য বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা আবার চালু করতে চায় জার্মানির সম্ভাব্য সরকার৷ বিশেষ করে বৃদ্ধাশ্রমে সবার জন্য প্রতিদিন এমন পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করে বয়স্ক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ চলছে৷ উল্লেখ্য, টিকাপ্রাপ্ত মানুষের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় ও তাদের মাধ্যমেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় সবার জন্য আরও বেশি করোনা পরীক্ষার দাবি বাড়ছে৷
বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণের কারণে জার্মানির হাসপাতালগুলির ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের অবস্থা নিয়ে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে৷ অনেক অঞ্চলে হাসপাতাল ও আইসিইউ ইতোমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত রোগীদের কারণে এতটা ভরে গেছে যে অন্যান্য জরুরি চিকিৎসা ও অপারেশন অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে৷ ইনসিডেন্সের মাত্রা ৩০০ পেরিয়ে গেলে আইসিইউগুলিতে রোগীদের সংখ্যা ৪,৫০০ ছুঁতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে হাসপাতাল সংগঠন৷ স্কুলের অবস্থা নিয়েও দুশ্চিন্তা প্রকাশ করছে শিক্ষকদের সংগঠন৷ বিশেষ করে ১২ বছরের কম বয়সি শিশু-কিশোরদের জন্য এখনো কোনো টিকা অনুমোদন না পাওয়ায় স্কুল ও কিন্ডারগার্টেনে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ অনেক রাজ্যে স্কুলে মাস্ক পরার নিয়ম শিথিল করায় সংক্রমণের হার বাড়ার খবর আসছে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, ডিপিএ)