1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‌কলকাতায় প্রথম করোনা-মৃত্যু

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২৩ মার্চ ২০২০

সোমবার বিকেল থেকে কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল চলে গেল লকডাউন এর আওতায়৷ আর এই দিনই শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল৷

https://p.dw.com/p/3ZuxR
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

ঘোষণা ছিল ২৪ ঘণ্টা আগে থেকেই, যে ২৩ মার্চ বিকেল পাঁচটা থেকে কলকাতা শহরসহ পশ্চিমবঙ্গের এক বড় অংশে লকডাউন চালু হয়ে যাবে৷ অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া চালু থাকবে না কিছুই৷ গণপরিবহণ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে৷ এবং যদিও বলা হয়েছে মুদির দোকান, ওষুধের দোকান, এবং কাঁচাবাজার খোলা থাকবে, কিন্তু ট্রেন চলাচল এবং অন্যান্য পরিবহণ ব্যবস্থা কার্যত বন্ধ থাকবে, খুব বেশিদিনের রসদ কোনও দোকানেই মজুত থাকবে না৷ যদি না রাজ্য সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়৷

ফলে সোমবার সকাল থেকেই দোকানে দোকানে ছিল বেজায় ভিড়৷ সবাই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে ব্যস্ত ছিল৷ এবং পূর্বনির্ধারিত সময়ের আগে থেকেই রাস্তাঘাট হয়ে যায় ফাঁকা৷ ঘরে ফিরতে ব্যস্ত কিছু বেসরকারি গাড়ি ছাড়া ট্যাক্সি, অটো রিকশা, বাস উঠে যায় রাস্তা থেকে৷ সন্ধে ছ'‌টার পর থেকে রাস্তায় পুলিসের গাড়ি ছাড়া আর কিছুই ছিল না৷ রাস্তার হকাররা এদিন আর দোকানপাট খোলেননি৷ মুষ্টিমেয় কিছু দোকান বন্ধ হয়ে যায় দুপুরের পর৷ বিকেলেই জনশূন্য হয়ে যায় শহর৷

এই পরিস্থিতিতে একাধিক সমাজসেবী সংগঠন স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি মানুষকে, বিশেষত বয়স্ক এবং অসুস্থদের ওষুধপত্র ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে৷ এরকমই একটি নাগরিক মঞ্চ জলপাইগুড়ির, যারা সোশাল মিডিয়ায় জানিয়েছিল, যে কোনও প্রয়োজনে তারা পাশে আছে৷

মঞ্চের মূল উদ্যোক্তা শৈবাল বসু ডয়চে ভেলেকে জানালেন, প্রথমে পরিচিত একজনের অসুস্থ বাবাকে ওষুধ পৌছনোর জন্য তাঁরা উদ্যোগী হয়েছিলেন৷ তার পরই তাঁদের মাথায় আসে, এরকম আরও অনেকেই থাকবেন, যাঁদের সাহায্য প্রয়োজন৷ ফলে ফেসবুকে এবং হোয়াটসঅ্যাপে প্রচার শুরু করেন তাঁরা৷ সাড়া পান প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই৷ এবং তার থেকেও উৎসাহব্যঞ্জক যেটা, অনেকে সাড়া দিলেন যে তাঁরাও রয়েছেন৷ তাঁরাও হাত বাড়াচ্ছেন এই কাজে৷ শৈবাল বসু জানাচ্ছেন, জলপাইগুড়ি প্রশাসনের সঙ্গেও তাঁদের কথা হয়েছে৷ এই কাজ যাতে সুষ্ঠুভাবে এবং অবাধে করা যায়, তার জন্য প্রশাসনিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি মিলেছে

এদিকে এদিনই কলকাতা শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে প্রথম করোনা-মৃত্যুর ঘটনা ঘটল৷ শহরতলীর দমদম এলাকার বাসিন্দা, ৫৭ বছর বয়সি ওই ব্যক্তির প্রত্যক্ষ সংক্রমণের আপাতদৃষ্টিতে কোনও কারণ ছিল না৷ তিনি কোনও সংক্রামিত এলাকায় যাননি, বা আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে আসেননি৷ সঙ্গত কারণেই এই মৃত্যু রাজ্য সরকারের উদ্বেগের কারণ হয়েছে৷

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সর্বতোভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন, যার প্রশংসা করছেন এমনকী তাঁর বিরোধীরাও৷ রাজ্যে যেহেতু আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগশয্যার সংখ্যা খুব সীমিত, সরকারের নির্দেশে এদিন থেকে হাওড়ার ডুমুরজোলার গোটা একটি স্টেডিয়াম ১২০ শয়্যার অস্থায়ী হাসপাতালের চেহারা নিয়েছে৷ এছাড়া অন্য সরকারি হাসপাতালেরও করোনা সংক্রমণের চিকিৎসার সক্ষমতা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার৷