কাতারে নিরাপত্তার বড় দায়িত্বে পাক সেনা
১৭ নভেম্বর ২০২২ফুটবলার, স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা তো আছেই, সেই সঙ্গে বিশ্বকাপ উপলক্ষে ১২ লাখ মানুষ কাতার যাবেন, তাদের নিরাপত্তার প্রশ্নও আছে। কাতারের পক্ষে একা এতবড় আসরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। তাই তারা অন্তত ১৩টি দেশ থেকে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীদের নিয়োগ করছে। তবে একমাত্র পাকিস্তানই সেনা পাঠিয়েছে। অক্টোবরেই সাড়ে চার হাজার পাকিস্তানি সেনা কাতার পৌঁছে গেছেন। নিরাপত্তা দেয়ার জন্য তাদের উপর খুব বেশি করে ভরসা করছে কাতার।
কাতারকে নিরাপত্তারক্ষী দিয়ে যে সব দেশ সাহায্য করছে, তাদের মধ্যে আছে অ্যামেরিকা, তুরস্ক, ফ্রান্স, জর্ডন, যুক্তরাজ্য।
পাকিস্তানের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ডিডাব্লিউকে বলেছেন, কাতার সরকারের বিশেষ অনুরোধেই সেখানে সেনা পাঠানো হয়েছে। কাতারের সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা মাথায় রেখেই সেনা পাঠানো হয়েছে।
পাকিস্তানের পরেই আছে তুরস্ক। তারা তিন হাজার নিরাপত্তারক্ষী পাঠিয়েছে কাতারে। তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বিশেষ করে দাঙ্গারোধী পুলিশই পাঠানো হয়েছে। এছাড়া কাতারের নিরাপত্তারক্ষীদেরও বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছে তুরস্ক। প্রতিয়োগিতার সময় কেমনভাবে নিরাপত্তার বিষয়টি সামলাতে হবে, তা শেখানো হয়েছে তাদের।
কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আলি বকির বলেছেন, ''এই প্রশিক্ষণের উপরে খুবই জোর দেয়া হয়েছিল।'' ডিডাব্লিউকে তিনি বলেছেন, ''কাতারের জনসংখ্যা বেশি নয়। তাদের কাছে তাই প্রশিক্ষিত বাহিনী খুবই জরুরি।''
আরব দেশগুলি বিদেশি শ্রমিকদের উপর খুবই বেশি করে নির্ভরশীল। কাতারও তাই। এমনকী নিরাপত্তার কাজেও তারা বিদেশের দিকে তাকিয়ে।
গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলের সদস্য দেশগুলিতে দুই থেকে তিন কোটি বিদেশি শ্রমিক থাকেন। তার মধ্যে আমিরাত, বাহরিন, সৌদি আরব, ওমান, কাতার ও কুয়েতে থাকেন বেশি বিদেশি শ্রমিক। কাতারে তো প্রায় ২০ লাখ বিদেশি শ্রমিক আছে। কাতারের নাগরিকের সংখ্যা মাত্র চার লাখ।
বকির বলেছেন, এই অবস্থায় কাতারের পক্ষে বিশ্বকাপের দুই সপ্তাহ ধরে সকলের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা অসম্ভব।
২০১৪ সাল থেকে কাতারে সামরিক প্রশিক্ষণ নেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সিদের চার মাসের জন্য এই প্রশিক্ষণ নিতে হয়।
কেন পাকিস্তান?
বকির বলেছেন, ''উপসাগরীয় দেশগুলির সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক খুবই ভালো। পাকিস্তান তাদের সুরক্ষা কর্মীদের এখানে পাঠায়। প্রচুর পাকিস্তানিওকানে কাজ করতে আসে।''
১৯৯০-৯১-তে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সেনা কুয়েতের সেনার প্রযুক্তিগত ও পরামর্শদাতার ভূমিকায় ছিল।
ইসলামাবাদের ফুটবলপ্রেমী ওসামা মালিক বলেছেন, ''পাকিস্তান কখনই বিষয়টি নিয়ে দেশের মানুষকে কিছু জানায় না। এর পরিবর্তে পাকিস্তান কী পেয়েছে বা পাচ্ছে, সেটাও অজানা। স্থানীয় মিডিয়াতেও বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি আলোচনা হয় না।''
মোহির ঘায়েদি/জিএইচ