কে হতে চলেছেন মিস্টার বা মিসেস ইউরোপ?
২৯ মে ২০১৯রবিবার ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর ইউরোপের ক্ষমতাকেন্দ্রে বেশ বড় রদবদল ঘটেছে৷ মধ্যপন্থি দুই শিবির ভোটারদের সমর্থন হারিয়েছে৷ অন্যদিকে সবুজ ও উদারপন্থি শিবিরের শক্তি বেড়েছে৷ এই পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে শীর্ষ নেতারা মঙ্গলবার ব্রাসেলসে মিলিত হলেন৷ পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর ইউরোপীয় কমিশনসহ বিভিন্ন ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠানের নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ঐকমত্য গড়ে তোলাই ছিল তাঁদের প্রধান উদ্দেশ্য৷ আগামী ২০ ও ২১শে জুন পরবর্তী শীর্ষ বৈঠকের আগেই কমিশনের শীর্ষ পদগুলির জন্য প্রার্থী তালিকা স্থির করতে চান তাঁরা৷ এছাড়া ইইউ পরিষদ, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ইইউ পররাষ্ট্র নীতির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান কর্মকর্তার পদের জন্যও নাম স্থির করতে হবে৷
মঙ্গলবারের বৈঠকে অবশ্য গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মৌলিক মতপার্থক্য উঠে এসেছে৷ বিশেষ করে এই প্রশ্নে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ও জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের মধ্যে সংঘাত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে৷ এতকাল ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সংসদীয় দলগুলি যে যার শীর্ষ প্রার্থীকে ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনীত করে এসেছে৷ ইইউ শীর্ষ নেতাদের কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থনের পাশাপাশি ইউরোপীয় পার্লামেন্টে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলে তবেই কোনো প্রার্থী কমিশনের প্রেসিডেন্ট হতে পারেন৷
মাক্রোঁসহ একাধিক নেতা এই রীতির বিরোধী৷ কোনো ব্যক্তির নাম নিয়ে আলোচনার বদলে জলবায়ু পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলি সামনে রেখে তার ভিত্তিতে কোনো প্রার্থীর অভিজ্ঞতা, জ্ঞান, বিশ্বাসযোগ্যতা বিচার করতে চান তাঁরা৷ অন্যদিকে ম্যার্কেলসহ বাকি নেতারা বর্তমান রীতি অনুযায়ী ঐকমত্যের ভিত্তিতে মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে থেকে কমিশনের প্রেসিডেন্ট বাছাইয়ের পক্ষে৷ ম্যার্কেল বলেন, একমাত্র এভাবেই ইইউ ভবিষ্যতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারবে৷
উল্লেখ্য, ম্যার্কেল রক্ষণশীল শিবিরের প্রার্থী মানফ্রেড ভেবার-এর প্রতি পূর্ণ সমর্থন দেখাচ্ছেন৷ অন্যদিকে মাক্রোঁ বর্তমান ইইউ কমিশনর মার্গ্রেটে ভেস্টাগার, কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রান্স টিমারমান্স ও ইইউ-র ব্রেক্সিট মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে-র মতো অভিজ্ঞ ও দক্ষ প্রার্থীর মনোনয়নের পক্ষে৷ ফলে ভেবার-এর জয়ের সম্ভাবনা কিছুটা কমে যাচ্ছে৷ শীর্ষ পদগুলির ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের ভারসাম্য বজায় রাখার পক্ষেও সওয়াল করেছেন মাক্রোঁ-সহ অনেকেই৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)