ক্যামেরন, সারকোজি, ওবামার লিবিয়া সংক্রান্ত খোলা প্রবন্ধ
১৫ এপ্রিল ২০১১প্রবন্ধের ভাষা তো খুবই কড়া এবং দ্ব্যর্থহীন৷ ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রের তিন নেতা লিখেছেন, ‘‘এমন একজন মানুষ, যে তার নিজের দেশের জনগণকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে, তাকে কোনো ভবিষ্যৎ সরকারে রাখার কথা ভাবাই যায় না৷ গাদ্দাফি যতোদিন ক্ষমতায় থাকবেন, ততোদিন ন্যাটো এবং তার জোট সহযোগীদের তাদের অভিযান চালিয়ে যেতে হবে৷... কেননা একনায়কত্ব থেকে সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণ শুধু নতুন প্রজন্মের নেতাদের দ্বারাই সূচিত হতে পারবে৷ সেই উত্তরণ যা'তে সফল হয়, সেজন্য কর্নেল গাদ্দাফিকে যেতেই হবে, চিরকালের জন্য যেতে হবে৷''
ওদিকে ন্যাটো, যাদের হাতে এখন ঐ অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব, তারা দ্বিধাবিভক্ত৷ কেউ গরম তো কেউ নরম৷ রণাঙ্গণেও মোটামুটি অচলাবস্থা৷ না, বস্তুত রণাঙ্গণে পরিস্থিতি সঙ্গীণ, বিশেষ করে বিদ্রোহীদের দৃষ্টিকোণ থেকে৷ ন্যাটোর বিমান রাজধানী ত্রিপোলিতে বোমা ফেলছে বটে, কিন্তু তা এ্যাতো দেখেশুনে, সাবধানে, যে গাদ্দাফি স্বয়ং সবুজ সাফারি জ্যাকেট পরে, চোখে কালো চশমা দিয়ে, খোলা ফোর-হুইলারে চড়ে রাস্তায় চক্কর দিয়েছেন৷ ঐ পশ্চিমেরই মিস্রাতা শহরের কিন্তু এখন মধ্যযুগীয় দুর্গ অবরোধের মতো অবস্থা, এ'কথা বলা হয়েছে তিন নেতার প্রবন্ধেও৷ মিস্রাতার বন্দর এলাকাটা একমাত্র এখনও বিদ্রোহীদের জন্য খোলা৷ সেখানে গাদ্দাফি বাহিনীর ছোঁড়া ২০০টি গ্রাড মিসাইল এসে পড়েছে৷ শিশু ও নারী সহ মোট ২৩ জনের নিহত হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে৷
মিস্রাতা'তে বহু বিদেশী শ্রমিক আটকা পড়েছে৷ তাদের মধ্যে নাকি বাংলাদেশিরাও আছেন৷ বিদেশিরা ঐ বন্দর এলাকাতেই আশ্রয় নিয়েছেন সেখান থেকে কোনো জাহাজ ধরার আশায়৷ বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে খোলা আকাশের নীচে, সামান্য খাদ্য এবং অপরিষ্কার পানি সম্বল করে দিন কাটাচ্ছেন৷ ঐ আনুমানিক সাড়ে ছ'হাজার বিদেশি শ্রমিকদের মধ্যে অধিকাংশ মিশর এবং নাইজিরিয়া থেকে হলেও, তাদের মধ্যে নাকি ৬০০ বাংলাদেশি আছেন৷ এবার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংগঠন আইওএম'এর ভাড়া করা একটি গ্রিক ফেরি জাহাজ মিস্রাতা পৌঁছেছে ঐ বিদেশি শ্রমিকদের প্রথমে বেনগাজি নিয়ে আসার জন্য৷ কিন্তু সে ফেরিতেও মোটে ৮০০ লোক ধরে৷
একে'ও এক ধরণের রণাঙ্গণ বলা চলে৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম