ক্ষতিপূরণ পাবেন জার্মান সমকামী সেনারা
২৬ নভেম্বর ২০২০যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিল আঙ্গেলা ম্যার্কেলের মন্ত্রিসভা। জার্মান সেনা বাহিনীর যে সমস্ত সমকামী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ হয়েছে, তাঁদেরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। মন্ত্রিসভার ধারণা, অন্তত এক হাজার মানুষ এই ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী। তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার ইউরো ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১৯৬০ সালে জার্মানিতে সমকামীদের জন্য বিশেষ আইন তৈরি হয়। তার আগে পর্যন্ত সমকামিতা নিষিদ্ধ ছিল সেখানে। কিন্তু ১৯৬০ সালের পর থেকে গে এবং লেসবিয়ানদের উপর থেকে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। জার্মান সেনা বাহিনীতেও সমকামী অংশগ্রহণে কোনো বাধা ছিল না। বস্তুত, ২০০০ সালে জার্মান সেনায় সমকামী অংশগ্রহণ নিয়ে বিশেষ আইনও তৈরি করা হয়। কিন্তু বাস্তব সব সময় আইনের উপর নির্ভর করে না।
সম্প্রতি একটি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ১৯৫৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত জার্মান সেনা বাহিনীতে সমকামীদের চূড়ান্ত হেনস্থা করা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। তাঁদের প্রোমোশন দেওয়া হয়নি, কাজ থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতেই জার্মান সরকার সিদ্ধান্ত নিল, বৈষম্যের শিকার ওই ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
২০০০ সালে জার্মান সেনায় সমকামী আইন হওয়ার আগে সেনা আইনে বহু সমকামীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল সেনা আদালত। মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেছে, ওই সমস্ত ব্যক্তিকে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার ইউরো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এর বাইরেও যাঁরা বৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন, তাঁদেরকেও নাম নথিভুক্ত করতে বলা হয়েছে। শুধু পশ্চিম নয়, কমিউনিস্ট শাসিত পূর্ব জার্মানির সেনাদেরও ওই তালিকায় নাম নথিভুক্ত করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
ম্যার্কেল সরকারের এই ঘোষণায় স্বাভাবিক ভাবেই খুশি দেশের অধিকার রক্ষা মঞ্চগুলি। তবে তাদের বক্তব্য, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ আরো বাড়ানো উচিত। দিনের পর দিন ধরে যাঁরা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, কাজ হারিয়েছেন, প্রমোশন পাননি, তাঁদের এত কম ক্ষতিপূরণ প্রাপ্য নয়। তবে জার্মান সরকারের এই ঘোষণার পরে আনন্দ প্রকাশ করেছেন বৈষম্য়ের শিকার হওয়া তৎকালীন সেনা বাহিনীর সদস্যরা। তাঁরা বলেছেন, এত দিনে ঠিক ঠিক বিচার পেলেন তাঁরা।
এসজি/জিএইচ (এপি, ডিপিএ)