ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখে ইয়েমেন
৯ নভেম্বর ২০১৭জাতিসংঘ এবং আরও ২০টিরও বেশি মানবাধিকার সংগঠন সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যাতে তারা ইয়েমেনের বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও ভূমিতে অবরোধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে৷ এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে ইয়েমেনে লাখ লাখ মানুষ মৃত্যু ও ক্ষুধার মুখে পতিত হবে বলে আশংকা করছে তারা৷
‘কেয়ার', ‘সেভ দ্য চিলড্রেন' এবং ‘ইসলামিক রিলিফ' জানিয়েছে, ইয়েমেনের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ আমদানিকৃত সরবরাহের উপর নির্ভরশীল৷ তারা বলছে, ২ কোটিরও বেশি মানুষের মানবিক সাহায্যের প্রয়োজন, যাদের মধ্যে ৭০ লাখ ‘প্রায় দুর্ভিক্ষের' কবলে রয়েছে৷ আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে তাদের খাওয়ার মতো কোনো দ্রব্য থাকবে না৷ এছাড়া একমাসের মধ্যে সব ধরনের ‘ভ্যাকসিন' শেষ হয়ে যাবে৷ বৃহস্পতিবারের এক বিবৃতিতে অবিলম্বে এই অবরোধ তুলে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে৷
গত শনিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ইয়েমেনের শিয়া বিদ্রোহীরা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ায় এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব ও তার সামরিক জোটভুক্ত দেশগুলো৷
অবরোধের আগ থেকেই ইয়েমেনে ত্রাণ সরবরাহ যথেষ্ট ছিল না৷ জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার প্রধান মার্ক লোকক নিউ ইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘দক্ষিণ সুদান, সোমালিয়ার চেয়েও ইয়েমেনের অবস্থা ভয়াবহ৷ গত কয়েক দশকের মধ্যে দুর্ভিক্ষে সবচেয়ে বেশি মানুষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দেশটিতে, যা হয়ত বিশ্বে আর কোথাও দেখা যায়নি৷''
তিনি আরও জানান, বুধবার সকালে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে ইয়েমেনে বাণিজ্যিক বিমান চলাচল এবং ত্রাণ সরবরাহের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷
ইয়েমেনে ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং বছরের শুরু থেকে সেখানে কলেরার প্রকোপ বাড়ার পর এখন তা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে৷ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি প্রতি দ্বিতীয় মাসে ৭০ লাখ মানুষের খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছে সেখানে৷
শনিবারের হামলার পেছনে ইরানের হাত রয়েছে বলে মনে করছে সৌদি আরব৷ ইরান ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্যান্য অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে বলে দাবি করছে তারা৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)