খাদ্য সুরক্ষা বিল অর্ডিন্যান্সে নয়, সংসদেই পাস হবে
১৪ জুন ২০১৩বিল পাস হলে প্রত্যেক গরিব পরিবার মাসে ২৫ কিলো খাদ্যশস্য কম দামে পাবার আইনি অধিকার পাবে৷
খাদ্য সুরক্ষা বিল অর্ডিন্যান্সের পথে কার্যকর করার বিষয়ে মন্ত্রিসভা একমত না হওয়ায় সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে তা পাস করা হবে৷ ২০০৯ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পরিবারগুলির জন্য ভরতুকি দামে খাদ্যশস্য দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কংগ্রেস৷ কিন্তু গত চার বছরে তা কার্যকর হয়নি৷
এখন ২০১৪ সালের সংসদীয় নির্বাচনের মুখে কংগ্রেস তাড়াহুড়ো করে তা পাস করতে মরিয়া হয়ে ওঠার একমাত্র কারণ রাজনৈতিক ফায়দা তোলা৷ নিজেদের দূর্গ সামলাতে কংগ্রেস এই বিলকে করতে চাইছে হাতিয়ার, বিরোধী দলগুলির এমনটাই অভিযোগ৷ বিরোধীদের মতে, সরকারি গুদামে মজুত হাজার হাজার টন খাদ্যশস্য পচে নষ্ট হবার আগে গরিবদের মধ্যে তা বিলি করার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এখনো পালিত হয়নি৷
এই বিল পাস হলে গরিবরা কীভাবে উপকৃত হবে? ভারতের ১২০ কোটি জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ, মানে প্রায় ৭০ কোটি পরিবারকে ভরতুকি দামে মাসে মাথাপিছু পাঁচ কেজি খাদ্যশস্য সরবরাহের আইনি গ্যারান্টি দেয়া হবে৷ অর্থাৎ মাথাপিছু পাঁচ কিলো হিসাবে পাঁচজনের পরিবার মাসে পাবে ২৫ কিলো খাদ্যশস্য এক টাকা থেকে তিন টাকা কিলো দরে রেশানের দোকান থেকে৷ গরিব পরিবারগুলির ৭৫ শতাংশ শহরে এবং ৫০ শতাংশ গ্রামে৷ এর জন্য ভরতুকি বাবদ সরকারের খরচ হবে বছরে এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা৷
ভারতে কোটি কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে বাস করেন৷ হাজার হাজার শিশু অপুষ্টির শিকার৷ এক সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়, দেশে পাঁচ বছরের নীচে অর্ধেক শিশুর ওজন কম৷ ঐ বয়সের ৪২ শতাংশ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে৷ বিশ্বের তিনজন অপুষ্ট শিশুর একজন ভারতের৷ ভিটামিন-এ অভাব ভারতে সর্বাধিক৷ প্রায় ৬ শতাংশ শিশু চোখে ভালো দেখতে পায় না৷ বিশ্বে তিন কোটি ৮০ লাখ অন্ধ শিশু৷ তার মধ্যে দেড় কোটি ভারতে৷ তার মধ্যে তিন লাখ শিশুর অন্ধত্ব নিবারণযোগ্য৷ আর অর্থনৈতিক মাপকাঠিতে উন্নত হলেও সামাজিক স্বাস্থ্য প্রকল্প অবহেলিত৷ ক্ষুধা ও অপুষ্টির অসাম্য তাই প্রকট৷ প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘শিশুদের অপুষ্টি জাতীয় লজ্জা''৷