খালেদা জিয়ার সফরে সম্পর্কের বরফ গলার বার্তা
৩১ অক্টোবর ২০১২ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এবং নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সলমান খুরশিদের সঙ্গে বৈঠকে খালেদা জিয়া স্পষ্ট করে জানিয়ে গেলেন যে, সামনের নির্বাচনে ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের মাটিতে ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বরদাস্ত করবে না বিএনপি সরকার৷ পাশাপাশি, ভারতের তরফে তিস্তা চুক্তির দ্রুত বাস্তবায়ন, বাংলদেশ সীমান্তে প্রাণহানির ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস আদায় করে নিলেন তিনি৷
হাসিনা সরকারের সঙ্গে দিল্লির ঘনিষ্টতা কারোর অজানা নয়৷ তুলনায় বিএনপি'র সঙ্গে সম্পর্ক ছিল শীতল৷ উপমহাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সেই শীতলতা কাটাতে উভয় পক্ষই যে উদ্যোগী৷ এর প্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার মন্তব্য খুব অর্থবহ: ‘‘অতীতের দিকে তাকাতে চাই না৷ তাকাতে হবে ভবিষ্যতের দিক৷'' সেটাই খালেদা জিয়ার সফরের মোদ্দা কথা৷
ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় থেকে খালেদা জিয়ার সফরকে বলা হয় ইতিবাচক৷ বহুদলীয় গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দিল্লির সুসম্পর্ক বজায় রাখার প্রয়াসে বিএনপিও ইতিবাচক বলে মনে করছে৷ ভারতের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সলমান খুরশিদের সঙ্গে বৈঠকে ভারতের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর জোর দেন খালেদা জিয়া৷
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক পার্থ প্রতিম বসু মনে করেন, ভারতের দিক থেকে নীতি পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘‘একই ঝুড়িতে সব ডিম রাখা কাজের কথা নয়৷ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে একটা প্রবণতা হলো, কোনো দলই পর পর দুবার ক্ষমতায় আসেনি৷ তাই এবারে যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তাতে বিএনপি'র ফিরে আসার সম্ভাবনাই বেশি৷''
সামনের নির্বাচনে যদি পট পরিবর্তন হয়, তার জন্য দিল্লি আগে থেকেই জমি তৈরি করে রাখছে৷ তাতে খালেদা জিয়ার সাড়া দেবার ইঙ্গিত রয়েছে৷ অতীতে তাঁর ভারত-বিরোধীতা কারোর পক্ষেই ভালো হয়নি৷ বাংলাদেশের পক্ষে তো নয়ই৷ তাই এখানে একটা নতুন চিন্তার সুযোগ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে৷
এই সফরকে শেখ হাসিনা ভালো চোখে না দেখলেও, দিল্লি তাঁকে জানিয়েই এই সফরসূচি তৈরি করেছিল৷