গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ হুমকির মুখে
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ এমনিতেই বিপর্যয়ের মুখোমুখি৷ সম্প্রতি সে দেশের সরকার রিফ এলাকার একটি বন্দর সম্প্রসারণের ঘোষণা দেয়ায় সমস্যা আরও বাড়তে যাচ্ছে৷
বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ
ইউনেস্কো অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে ১৯৮১ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই প্রবাল প্রাচীর এলাকায় ৬২৫ রকমের মাছ, ১৩৩ প্রজাতির হাঙর সহ অন্যান্য বৃহদাকার সামুদ্রিক মৎস, অসংখ্য প্রজাতির জেলিফিশ, ঝিনুক, শামুক এবং ত্রিশটিরও বেশি প্রজাতির তিমি মাছ ও ডলফিন রয়েছে৷ কিন্তু দূষণ ও মানবসৃষ্ট কারণে গত কয়েক দশক ধরে এই রিফের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে রয়েছে৷
বন্দর সম্প্রসারণ
১৯৮৪ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলের অ্যাবট বন্দরটি কয়লা রপ্তানিকাজে ব্যবহৃত হচ্ছে৷ সম্প্রতি সরকার এটার সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছে৷ কিন্তু এতে রিফের পরিবেশ আরও ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশবাদীরা৷
দক্ষিণ গোলার্ধের সবচেয়ে বড় বন্দর
সম্প্রসারণের পর অ্যাবট বন্দর দিয়ে প্রায় ১২০ মিলিয়ন টন কয়লা রপ্তানি করা সম্ভব হবে৷ ফলে এটিই হবে দক্ষিণ গোলার্ধের সবচেয়ে বড় বন্দর৷
ভারতের কয়লা রপ্তানি
অ্যাবট বন্দর সম্প্রসারণের অন্যতম একটি কারণ ভারতে কয়লা রপ্তানি৷ ভারতের দুটি কোম্পানি – জিভিকে এবং আদানি গ্রুপ – মাইনিং কোম্পানি হ্যানকক প্রোস্পেকটিং-এর সঙ্গে মিলে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড এলাকার খনি থেকে কয়লা উত্তোলন করতে চায়৷ এরপর সেটা অ্যাবট বন্দর দিয়ে ভারতে নিয়ে যাওয়া হবে৷
হুমিকর মুখে প্রবাল
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের কোরাল এমনিতেই হুমকির মুখে রয়েছে৷ বন্দর সম্প্রসারণের পর সেই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
কচ্ছপদের যে সমস্যা হবে
গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের কচ্ছপরা বিভিন্ন দ্বীপের সৈকতের বালুতে যৌনক্রিয়া করে থাকে৷ এক্ষেত্রে বালুর তাপমাত্রা একটা বড় ব্যাপার৷ বড় বন্দরের কারণে আশেপাশের এলাকার তাপমাত্রা বেড়ে গেলে সেক্ষেত্রে কচ্ছপরা বিপদে পড়তে পারে৷
আখ চাষও সমস্যা
অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূল জুড়ে থাকে আখের খেতে ব্যবহৃত কীটনাশকের একটা অংশ রিফের পানিতে পড়ে সামুদ্রিক প্রাণীদের জীবন বিপন্ন করছে৷ এর সঙ্গে বন্দরের সম্প্রসারণ কাজ যুক্ত হওয়ায় সমস্যা আরও বাড়বে৷