151209 100 Jahre Borussia Dortmund
২৩ ডিসেম্বর ২০০৯মরশুমের ষোলতম খেলার দিন শেষ হবার পর পয়েন্ট তালিকায় ডর্টমুন্ড নিজেকে ছয় নম্বর স্থানে নিয়ে গেছে৷ খেলার মাঠে দলের এই সাফল্যের মাঝেই বোরুসিয়া ডর্টমুন্ড পালন করছে তার শততম বর্ষপূর্তি৷ একশো বছরের ইতিহাস নিয়ে গর্ব তো করতেই পারে এই ক্লাব৷
এক ধরণের প্রতিবাদ থেকেই বোরুসিয়া ডর্টমুন্ড দলের উদ্ভব৷ শহরের উত্তরাঞ্চলের বর্সিগপ্লাৎস-এ এই ক্লাব গড়ে তোলে ১৮ জন স্কুল ছাত্র ১৯০৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর৷ কারণ স্থানীয় ধর্মযাজক ফাদার ডেভাল্ড তাদের ফুটবল খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন৷ কিন্তু ফুটবলের মজা কি আর তারা ছাড়তে পারে! স্থানীয় পানশালা সুম ভিল্ডশুৎস-এ তারা যখন ক্লাব গঠন করা নিয়ে বৈঠক করছিল তখন ফাদার ডেভাল্ড সেখানেও চড়াও হন৷ কিন্তু তাঁকে ভিতরে ঢুকতে দেয়া হয় নি৷ গড়ে ওঠে ফুটবল ক্লাব বোরুসিয়া ডর্টমুন্ড৷ প্রাশিয়া কথাটার ল্যাটিন নাম হচ্ছে বোরুসিয়া৷
যুদ্ধোত্তর জার্মানিতে উনুশ শো পঞ্চাশের দশকে বোরুসিয়া হয়ে ওঠে শীর্ষস্থানীয় ফুটবল ক্লাব৷ ১৯৫৬, ৫৭, ৬৩, ৯৫,৯৬ এবং ২০০২'এ এই দল হয় জার্মান লীগ চ্যাম্পিয়ন৷ দুবার জার্মান কাপ জিতে নেয়৷ তিনবার জার্মান সুপারকাপ৷ এবং ১৯৬৬ সালে লিভারপুলকে হারিয়ে ইউরোপীয় কাপ জয় করে নেয় ডর্টমুন্ড৷ কিন্তু ইউরোপীয় কাপ জয়ের সাফল্যের মাত্র ছয় বছর পর নীচের দিকে নামতে থাকে ক্লাব৷ দেখা দেয় আর্থিক বিপর্যয়৷ চার বছর পর আবার নিজেকে ওপরের কাতারে টেনে নিয়ে যেতে সক্ষম হয় ডর্টমুন্ড৷ ৮৬ সালে দেখা দেয় আবার সেকেন্ড ডিভিশনে নেমে যাওয়ার হুমকি৷ কিন্তু সে বিপদও কাটিয়ে ওঠে ক্লাব৷ ৩২ বছর পর ১৯৯৫ সালে ডর্টমুন্ড আবার লীগ চ্যাম্পিয়ন৷ মরশুমের একেবারে শেষ দিন হামবুর্গকে হারিয়ে এই জয় কেড়ে নেয় তার খেলোয়াড়রা৷ মাত্র ১৯ বছর বয়স্ক লার্স রিকেন নিজেও ছিলেন মাঠে৷ সেই অভিজ্ঞতা এখনও তাঁর স্মৃতিতে৷ তিনি বলেন,‘‘স্টেডিয়ামের সেকি পরিবেশ৷ সবার হাতে ছিল রেডিও৷ মাঝে মাঝেই ফ্যানদের দল উঠে দাঁড়াচ্ছে৷ আমার গায়ের সমস্ত লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে উত্তেজনায়৷ প্রবল আবেগের দিক থেকে সে ছিল সম্ভবত আমার জীবনের সেরা খেলা৷''
১৯৯৭ সালেই জুভেন্টুস টুরিনকে হারিয়ে ডর্টমুন্ড জিতে নেয় চ্যাম্পিয়ন্স লীগ৷ ২০০২ এ আবার জার্মান লীগ চ্যাম্পিয়ন৷ কিন্তু তারপর থেকেই নতুন করে সমস্যায় পড়তে থাকে দল৷ ২০০৮ এ নতুন ট্রেনার হিসেবে যোগ দেন ইউর্গেন ক্লপ৷ তিনি অপেক্ষাকৃত তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে ইতিমধ্যেই সাফল্য এনেছেন৷ এবারের বুন্ডেসলীগা মরশুমে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি গোল করার তালিকায় দলের দক্ষ স্ট্রাইকার আর্জেন্টিনার লুকাস বারিয়স-এর স্থান দ্বিতীয়৷ ফলে শতবর্ষ বয়সী ফুটবল ক্লাব ডর্টমুন্ড আগামী দিনগুলোতে আর কি সাফল্যের পরিচয় দেয় সেটা দেখার বিষয়৷
প্রতিবেদক: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার