জলবায়ু পরবর্তনের ভয়াবহ প্রভাব
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩আইপিসিসি বলছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণ যে মানুষ, তা নিয়ে আর তেমন কোনো সন্দেহ থাকতে পারে না৷ গত ৬০ বছরে উষ্ণায়নের অন্তত অর্ধেকের পেছনে মানুষের কার্যকলাপ কাজ করেছে৷ ৯৫ শতাংশ নিশ্চয়তার সঙ্গে আইপিসিসি এক পূর্বাভাষ দিচ্ছে৷ সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণ করে এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে৷ যেমন চলতি শতাব্দীর মধ্যে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা আরও ০.৩ থেকে ৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়বে৷ এর ফলে ২১০০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও ২৬ থেকে ৮২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বেড়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে৷ সেইসঙ্গে অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহ, বন্যা ও খরা আরও ঘনঘন দেখা যাবে৷
আইপিসিসি-র বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন বিপর্যয় এড়ানোর চাবিকাঠিও মানুষের হাতেই রয়েছে৷ প্রথমেই জীবাশ্ম-ভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার অবিলম্বে কমাতে হবে৷ আইপিসিসি-র প্রধান ক্রিস্টিনা ফিগেরেস শুক্রবারে প্রকাশিত রিপোর্ট-কে গোটা বিশ্বের জন্য অ্যালার্ম ঘড়ি হিসেবে বর্ণনা করেছেন৷ ২০১৫ সালে যে আন্তর্জাতিক চুক্তি নবায়ন হবার কথা, তাতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের মাত্রা আরও উল্লেখযোগ্য হারে কমানোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা উচিত বলে তিনি মনে করেন৷ জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুনও সব দেশের সরকারের উদ্দেশ্যে এ ক্ষেত্রে সক্রিয় হয়ে ওঠার ডাক দিয়েছেন৷
এমন আহ্বানে কাজ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে৷ ২০০৯ সালে কোপেনহেগেন শীর্ষ সম্মেলনে প্রায় সার্বিক ঐকমত্যের পর জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে আগ্রহ আবার কমে গেছে৷ বিশেষ করে শিল্পোন্নত দেশগুলি আপাতত আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে হিমশিম খাওয়ায় তারা গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন কমাতে কতটা কাজ করবে, তা স্পষ্ট নয়৷
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিও আইপিসিসি রিপোর্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, যারা বিজ্ঞানকে অমান্য করে অথবা কোনো পদক্ষেপ না নেয়ার পেছনে কোনো অজুহাত দেখায়, তারা আগুন নিয়ে খেলা করছে৷
বিশ্ব আবহাওয়া সংগঠনের প্রধান মিশেল জারো এই রিপোর্টের মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের আজকের কার্যকলাপ সমাজের উপরও গভীর প্রভাব ফেলবে৷ আগামী প্রজন্মগুলিকেও তার ফল ভোগ করতে হবে৷''
গত ২৫ বছরে আইপিসিসি মোট চারটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে৷ প্রতিবার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের মাত্রা তাতে আরও তীব্র হয়ে উঠেছে৷ বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব সম্পর্কে তিন খণ্ডের প্রথম অংশটি প্রকাশিত হলো শুক্রবার৷
এসবি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)