চাঁদে নয়, মঙ্গলে কেন বসতি গড়তে চায় মানুষ?
১৬ জুলাই ২০১৯১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের তিন প্রথমবারের মতো চাঁদের মাটিতে পা রেখেছিলেন৷ শনিবার সেই ঐতিহাসিক ঘটনার ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে৷ ১৯৬৯ সাল থেকে টানা তিন বছর চাঁদে ছয়টি মনুষ্য মিশন পরিচালনা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র৷ এরপর আর কেউ চাঁদে যায়নি৷
তবে সেই চেষ্টা আবার শুরু হচ্ছে৷ ২০২৪ সালে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বিজ্ঞানীদের পাঠাতে চায় মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা৷ এই মিশনের নাম দেয়া হয়েছে ‘আর্তেমিস'৷
পেপলের সাবেক প্রধান নির্বাহী ও টেসলা প্রতিষ্ঠাতা এলোন মাস্ক এবং অ্যামাজনের মালিক জেফ বেজোস দুজনই নাসার মিশনের আগে চাঁদে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন৷
তবে তাঁদের কেউই ভবিষ্যতে চাঁদে বসতি গড়ার কথা ভাবছেন না৷ মাস্ক গতবছর মঙ্গলে বসতি গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে একটি বই লিখেছিলেন৷ সেখানে অবশ্য তিনি মঙ্গলের আগে চাঁদে যাওয়া যে গুরুত্বপূর্ণ, সেটি স্বীকার করে নিয়েছিলেন৷ কারণ হিসেবে মাস্ক বলছেন, মঙ্গলের দূরত্ব অনেক৷ এই যাত্রাপথের মধ্যে যদি চাঁদে বিরতি দেয়া যায়, তাহলে সেটা ভালো হবে৷ পৃথিবী থেকে মঙ্গলগ্রহে যেতে এখনকার প্রযুক্তিতে প্রায় আট মাস সময় লাগতে পারে৷
নাসা এবং জেফ বেজোসও মাস্কের এই যুক্তি পছন্দ করেছেন৷
চাঁদের চেয়ে মঙ্গল ভালো
এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার রবার্ট জুবরিন মার্কিন সংস্থা ‘ন্যাশনাল স্পেস সোসাইটি'র ম্যাগাজিন ‘অ্যাড অ্যাস্ট্রা'য় একটি প্রবন্ধ লিখেছেন৷ সেখানে তিনি বলেন, চাঁদের চেয়ে মঙ্গলের পরিবেশ মানুষের বসবাসের জন্য বেশি উপযোগী৷ কারণ মঙ্গলে কার্বন ডাই-অক্সাইড থেকে শুরু করে নাইট্রোজেন, পানি ইত্যাদির পরিমাণ অনেক বেশি৷ তিনি বলেন, চাঁদেও কার্বন, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন ইত্যাদি রয়েছে, তবে সেগুলোর পরিমাণ ‘সাগরের পানিতে সোনা' থাকার মতো৷ এছাড়া চাঁদে শস্য ফলানোর মতো যথেষ্ট প্রাকৃতিক সূর্যালোক নেই, যেটা মঙ্গলে আছে, বলেন জুবরিন৷
চাঁদে স্টেশন?
চাঁদে বসতি গড়া না গেলেও সেখানে যেহেতু মঙ্গলে যাওয়ার পথে বিরতি নিতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা, তাই চাঁদের পরিবেশ সম্পর্কে জানাটা জরুরি৷ চাঁদে পানির অস্তিত্ব সম্পর্কে সম্প্রতি জানা গেছে৷ তবে সেই পানি চাঁদের কোন অংশে এবং কী পরিমাণে আছে, তা এখনও জানা যায়নি৷ ২০২৪ সালে নাসা যে বিজ্ঞানীদের চাঁদে পাঠাতে চাইছেন তাঁরা এসব তথ্য জানার চেষ্টা করবেন৷ চাঁদে যদি স্টেশন পরিচালনার মতো পর্যাপ্ত পানি থাকে, তাহলে তা মঙ্গলযাত্রার জন্য ভালো হবে বলেই এই চেষ্টা৷
ক্লেয়ার রোথ/জেডএইচ