1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘চাপ' অনুভব করছেন না টিভি মালিকরা!

সমীর কুমার দে, ঢাকা২৩ জানুয়ারি ২০১৫

বাংলাদেশের সবগুলো টেলিভিশন চ্যানেল মালিককে ডেকে সরকারের পাঁচজন মন্ত্রী সহযোগিতা চেয়েছেন৷ টিভি মালিকরাও ‘সহিংসতাকে উসকে দেয়' এমন কোনো খবর প্রচার করবেন না বলে মন্ত্রীদের আশ্বস্ত করেছেন৷

https://p.dw.com/p/1EPag
Symbolbild - Interview
ছবি: Fotolia/wellphoto

অ্যাসোসিয়েশন অফ টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (এটকো) সভাপতি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘‘নাশকতাকে আমরা যেন সেনসেশনালাইজড না করি, এ ব্যাপারে কিছু মন্তব্যে আমরা একমত হয়েছি৷ আমাদের দেশের জন্য যা ক্ষতিকর – অবশ্যই তা আমরা করব না৷'' সরকারের পাঁচজন মন্ত্রীর এ ধরনের বৈঠককে ‘চাপ' মনে করছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘অবশ্যই এটা চাপ নয়৷''

গত বৃহস্পতিবার ‘দেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর করণীয়' নিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর মালিকদের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন সরকারের পাঁচ জন মন্ত্রী৷ এদের মধ্যে ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল৷ বৈঠকে মন্ত্রীরা টেলিভিশন মালিকদের সহযোগিতা চান৷

চলমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের পরামর্শ বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর ওপর এক ধরনের চাপ কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশের) সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘‘সাংবাদিক হিসেবে আমি কোনো চাপ অনুভব করিনি৷ চাপ অনুভব করলে অবশ্যই এর প্রতিবাদ করতাম৷ আমার কাছে মনে হয়েছে, এটি পর্যালোচনামূলক বৈঠক৷ সরকার দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে টেলিভিশন মালিকদের সঙ্গে কথা বলতেই পারেন৷ আর আমাদেরও দায়িত্ব আছে৷ কোনো সহিংসতাকে আমরা উসকে দিতে পারি না৷''

TV Schäden Fernsehen Sonnenblume
টিভি চ্যানেলের মালিকরা বলেছেন, ‘আমাদের দেশের জন্য যা ক্ষতিকর – অবশ্যই তা আমরা করব না৷’ছবি: Fotolia/af photo

মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলের এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত নন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের আরেকাংশের সভাপতি শওকত মাহমুদ৷ তিনি বলেন, জনগণ যাতে প্রকৃত ঘটনা জানতে না পারে তাই মিডিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ডেকে ‘ভদ্র থ্রেট' দিয়েছেন সরকারের মন্ত্রীরা৷ তিনি বলেন, অতীতে কখনও মিডিয়ার এত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মন্ত্রীদের এমন বৈঠক হয়নি৷ এখন থেকে আর টেলিভিশন চ্যানেলগুলো আর সঠিক সংবাদ দিতে পারবে না৷ কয়েকদিন আগে সরকার একুশে টেলিভিশনের মালিক আবদুস সালামকে গ্রেফতার করেছে৷ এরপর রিমান্ডে নিয়ে তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে৷ মিডিয়ার উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণের ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে জানান শওকত মাহমুদ৷ তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বলেছেন, সরকার মিডিয়ার উপর ‘সেন্সরশিপ' আরো করতে চাচ্ছে৷

তবে খালেদা জিয়ার অভিযোগ নাকচ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, টেলিভিশনগুলোকে ‘নেতিবাচক সংবাদ প্রচারে' বিরত থাকতে অনুরোধ করা কোনোভাবেই ‘সেন্সরশিপ' নয়৷ তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশে নেতিবাচক খবর প্রচার করা হয় না৷ এটা চাপিয়ে দেওয়া নয়, এটা সমাজের প্রতি নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে করা৷ নেতিবাচক সংবাদ সম্প্রচার করলে সন্ত্রাসীরা উত্সাহিত বোধ করবে৷' তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসীরা যাতে উত্সাহিত না হয় সেজন্য নেতিবাচক খবর প্রচার করবে না বলে কথা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ এটা সেন্সরশিপ হল কীভাবে, কোনো সেন্সরশিপ নেই৷'' বরং এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার ‘জ্ঞানের ঘাটতি' রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘‘উনাকে কেউ মিথ্যা বুঝিয়ে এসব কথাবার্তা বলাচ্ছেন৷''

টেলিভিশন চ্যানেল মালিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর আমির হোসেন আমু বলেন, ‘‘মিডিয়াকে জানাতে চাই, তাঁরা (টেলিভিশনের মালিকরা) অনেককিছু ওয়াকিবহাল ছিলেন না৷ তাদের কাছে আমরা অনেক কিছু প্রমাণ সহকারে উপস্থাপন করেছি৷ তাঁরাও কনভিন্সড এবং তারা বলছেন, আন্দোলন ও রাজনীতি এগুলো নয়, এটা সন্ত্রাস ও নাশকতা৷ সন্ত্রাস ও নাশকতা মানুষকে গাইড করতে পারে না৷ এগুলো নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে৷''