চিকিৎসকদের ধর্মঘট
১২ মে ২০১৪জনপ্রিয় বাংলা ব্লগ সামহয়্যার ইন ব্লগে এম এ হাসান মাহামুদের লেখার শিরোনাম, ‘‘ডাক্তার যদি কসাই হয়, রোগীর আশ্রয় কোথায়?'' তিনি লিখেছেন, ‘‘যেভাবে প্রতিনিয়ত ডাক্তাররা পেশাজীবী সাংবাদিকের গায়ে হাত দিচ্ছে, খামাখা কারণে ডাক্তাররা অনশনে যাচ্ছে, আর কর্তব্যে অবহেলা করে রোগীদের মৃত্যুর কারণ হচ্ছে; সেক্ষেত্রে রোগীরা ভবিষ্যতে চিকিৎসার জন্য কোথায় যাবে! এটা এখন ‘মেটার অব থিংক' হয়ে দাঁড়িয়েছে...৷''
এই ব্লগার লিখেছেন, ‘‘চিকিৎসকদের ওপর আঘাত এলে তারা এর প্রতিবাদ অবশ্যই করবেন৷ বিচারও চাইবেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরও উচিত হবে অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা৷ কিন্তু মানবসেবার এই মহৎ পেশায় নিয়োজিত মানুষ যদি দুর্বৃত্তদের অপরাধের শোধ নিতে গিয়ে রোগীকে তার প্রাপ্য চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেন কিংবা রোগীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেন তাহলে তা হবে আরও একটি অপরাধ৷''
প্রসঙ্গত, চিকিৎসকদের ধর্মঘটের কারণে সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছেন না অনেক রোগী৷ বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এই বিষয়ে লিখেছে, ‘‘আগামী বুধবার এক ঘণ্টার কর্মবিরতি ডেকে বিএমএ অন্য সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ধর্মঘটী চিকিৎসকরা তাদের আন্দোলনে অটল রয়েছেন৷ এই কারণে সোমবার নির্ধারিত সময় দুপুর ২টা পর্যন্ত দেশের বৃহত্তম এই সরকারি হাসপাতালে বহির্বিভাগে কোনো রোগী চিকিৎসা সেবা পাননি৷''
এদিকে ডয়চে ভেলের দ্য বব্স অ্যাওয়ার্ড জয়ী ব্লগার, সাংবাদিক আবু সুফিয়ান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘ডাক্তাররা বলেছে সাংবাদিকদের চিকিৎসা করবে না৷ আজ ডাক্তারদের সাংবাদিক সম্মেলন কি স্বাচিপ / ড্যাব এর ডাক্তার / মন্ত্রী / বিচারপতিরা কাভার করেছে? আগামী বুধবারে ডাক্তারদের কর্মসূচি যদি সাংবাদিকরা কাভার না করে? না৷ সাংবাদিকরা এমন করবে না৷ কারণ পূর্ণ পেশাদারিত্ব নিয়েই কাজ করে সাংবাদিকরা৷''
ব্লগার কাজি মাসুদ অবশ্য মনে করেন, সাংবাদিক এবং চিকিৎসকদের মধ্যকার বিরোধ ক্রমশ অন্যান্য দিকেও ছড়িয়ে যাচ্ছে৷ আমারব্লগে তিনি লিখেছেন, ‘‘প্রথমে বিষয়টা যখন সাংবাদিক বনাম ডাক্তার ছিল তখন মনে হল কিছু একটা ঝামেলা আছে দুইদিকেই৷ না হয় সেটা সাংবাদিকদের মধ্যে একটু বেশিই৷ কিন্তু এবার লাগলো ঢাকা ভার্সিটির স্টুডেন্টদের সাথে৷ আচ্ছা হঠাৎ করে ডাক্তার জাতিটা এত খেপে উঠার কারণ কি? নাকি তারা হঠাৎ ভাবা শুরু করছে যে দেশের মারামারি অঙ্গনে সবাই এগিয়ে যাচ্ছে তো তারা কেন পিছিয়ে থাকবে??''
‘চিকিৎসকদের জন্য নিরাপদ কর্মস্থল চাই' নামক একটি ফেসবুক গ্রুপে মাসুদ কবির হিরো লিখেছেন, ‘‘সুচিকিৎসার জন্য নিরাপদ কর্মস্থলের বিকল্প নাই৷ তাই এখন থেকে মনে প্রাণে অধিকার আদায়ের এই সংকল্প নিয়েই মানবতার মহান সেবা করে যেতে হবে৷ প্রয়োজনে রাজপথে দাবি আদায়ের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে৷ কে বলেছে চিকিৎসকরা রাস্তায় নামতে পারে না৷ নিরাপদ কর্মস্থল ছাড়া সুচিকিৎসা কিভাবে সম্ভব ??''
সংকলন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: জাহিদুল হক