চীনকে নিয়ে জাপানের উদ্বেগ
১৪ জুলাই ২০২১মঙ্গলবার জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি ফাইল প্রধানমন্ত্রী হাতে গেছে। সেই ফাইলে চীন সম্পর্কে উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। দক্ষিণ চীন সাগর থেকে শুরু করে তাইওয়ান-- বিভিন্ন বিষয়ে চীনের পদক্ষেপ এলাকার শান্তি বিঘ্নিত করছে বলে জাপানের বক্তব্য। জাপানের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে চীন।
বেশ কিছুদিন ধরেই চীনকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাপান। গত বছর ভারত-অস্ট্রেলিয়া-অ্যামেরিকার সঙ্গে যৌথ আলোচনায় অংশ নিয়েছিল জাপান। যৌথ নৌমহড়াতেও জাপান গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিল। জাপানের বক্তব্য, দক্ষিণ এশিয়ায় চীন যেভাবে নিজেদের শক্তি বাড়াচ্ছে, তা যথেষ্ট চিন্তার। শুধু স্থলসেনা নয়, চীন নৌসেনা ব্যাপক ভাবে বাড়িয়েছে গত কয়েক বছরে। ওই নৌসেনা দক্ষিণ চীন সাগরের বিভিন্ন স্ট্র্যাটেজিক অঞ্চলে আর্টিফিশিয়াল দ্বীপ তৈরি করে সেনাঘাঁটি তৈরি করেছে। ওই সমস্ত অঞ্চলই চীন নিজের এলাকা বলে দাবি করছে। জাপানের বক্তব্য, দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত অঞ্চলগুলি কব্জা করার জন্যই চীন এ কাজ করছে। শুধু তাই নয়, চীন সাগরের পূর্বে জাপানের বিতর্কিত দ্বীপগুলি নিয়েও চীন প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ। জাপানের বক্তব্য, এ ভাবেই এলাকায় ভারসাম্য নষ্ট করছে চীন।
তাইওয়ান নিয়েও দীর্ঘ বক্তব্য আছে জাপানের ফাইলে। বলা হয়েছে, তাইওয়ানের উপর চীন যেভাবে চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেছে, তা ভয়ংকর। হংকং এবং তাইওয়ানকে গিলে নেওয়ার চেষ্টা করছে চীন। তাইওয়ান এবং চীনের মধ্যে যে শক্তিসাম্য ছিল, তাও এখন চীনের দিকে হেলে গিয়েছে বলে জাপানের দাবি। বস্তুত, দীর্ঘদিন ধরেই একপ্রকার স্বশাসন উপভোগ করে তাইওয়ান। চীন অবশ্য বরাবরই তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে। জাপান, অ্যামেরিকা কেউই তাইওয়ানকে স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করে না। আবার চীনের অংশ বলেও মনে করে না। তাইওয়ানকে যারা স্বতন্ত্র রাষ্ট্র বলে মনে করে, চীন তাদের সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্ক তৈরি না। জাপান, অ্যামেরিকা তাইওয়ানের সঙ্গে অসরকারি স্তরে যোগাযোগ রক্ষা করে।
সম্প্রতি অ্যামেরিকা তাইওয়ানকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র বিক্রি করেছে। অসরকারি স্তরেই তাদের চুক্তি হয়েছে। চীনের শক্তির সঙ্গে পাল্লা দিতে তাইওয়ানকে বরাবরই অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে অ্যামেরিকা এবং জাপান। কিন্তু সম্প্রতি তাইওয়ান এবং হংকংয়ের উপর বিপুল চাপ তৈরি করেছে চীন। এই বিষয়টিও জাপানের উপর চাপ বাড়াচ্ছএ বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।
চীন অবশ্য জাপানের এই রিপোর্টকে মিথ্যা এবং অন্তরসারশূন্য বলে দাবি করেছে। তাদের দাবি, জাপান যে কটি বিষয় উত্থাপন করেছে, তার একটিও আসলে ধোপে টেকে না।
এসজি/জিএইচ (এপি, এএফপি)