চীনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের তোপ, ভারতের পাশে অ্যামেরিকা
১৯ জুন ২০২০ভারত-চীন সংঘাতের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ওপর আরও চাপ বাড়ালো অ্যামেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার টুইট করে বলেছেন, বাণিজ্য ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করা অসম্ভব নয়। এবং অ্যামেরিকা সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না।
গত প্রায় দেড় মাস ধরে লাগাতার চীনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ট্রাম্প। একাধিকবার অভিযোগ করেছেন, চীনের উহান প্রদেশের একটি ল্যাব থেকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। গোটা পৃথিবীতে করোনা ভাইরাস যে ভাবে ছড়িয়েছে, তার জন্যও চীনকে দায়ী করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর বক্তব্য, চাইলে চীন এই ভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে পারতো। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের হয়ে কাজ করছে, এই অভিযোগ তুলে তাদের ফান্ড বন্ধ করার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতেই কিছু দিন আগে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বন্ধ করার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। অ্যামেরিকার সংস্থাগুলিকে চীনের থেকে জিনিসপত্র আমদানি বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
কিন্তু বাস্তবে কি তা সম্ভব? মার্কিন বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ এবং ট্রাম্প সরকারের পরামর্শদাতা রবার্ট লাইটহাইজার সম্প্রতি কংগ্রেস প্রতিনিধিদের বলেছেন, অ্যামেরিকা এবং চীন বাণিজ্য ক্ষেত্রে যে ভাবে সম্পর্কযুক্ত, তাতে চাইলেই দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব নয়।
লাইটহাইজারের এই বক্তব্য শোনার পরেই টুইট করেন ট্রাম্প। স্পষ্ট জানিয়ে দেন, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার বিষয়টি অসম্ভব নয়। অ্যামেরিকা সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না।
শুধু বাণিজ্য ক্ষেত্রেই নয়, আন্তর্জাতিক কূটনীতিতেও চীনকে কোণঠাসা করার কৌশল নিয়েছে অ্যামেরিকা। সম্প্রতি লাদাখে চীন এবং ভারতের সেনাদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ হয়েছে। সেখানে দুই পক্ষেরই বেশ কিছু সেনা নিহত হয়েছেন। আহত বহু। এই পরিস্থিতিতে অ্যামেরিকা একাধিক বিবৃতি প্রকাশ করেছে। যাতে স্পষ্ট ভাবে ভারতের পক্ষে কথা বলা হয়েছে। বস্তুত, এই ঘটনার জন্য সরাসরি চীনকেই দায়ী করেছে মার্কিন প্রশাসন। বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও টুইটে বলেছেন, ''ভারতীয়দের প্রতি আমাদের সমবেদনা জানাচ্ছি। চীনের সঙ্গে সংঘাতে যাঁরা নিহত হয়েছেন তাঁদের পরিবারের প্রতি শোকজ্ঞাপন করছি। প্রত্যেক নিহত সেনার পরিবারকে আমরা মনে রাখব।''
এখানেই শেষ নয়, অ্যামেরিকার প্রথম সারির সেনেটর মিচ ম্যাককনেল বলেছেন, চীনের উসকানিতেই লাদাখের ঘটনা ঘটেছে। চীনের সেনা ভারতের জমি দখল করতে চাইছে। ১৯৬২ সালের পরে এত বড় সংঘাত আর কখনও ঘটেনি। তাঁর আরও বক্তব্য, চীন পৃথিবীর মানচিত্র নতুন করে তৈরি করতে চাইছে। এবং তার জন্য তাদের সেনাকে ব্যবহার করছে। সংসদে দাঁড়িয়ে এই বিবৃতি দিয়েছেন মিচ। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এও এক অভূতপূর্ব ঘটনা।
কূটনীতিকদের একাংশের বক্তব্য, করোনার সময় থেকেই অ্যামেরিকা চীনকে কোণঠাসা করার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। একদিকে তাইওয়ান, অন্য দিকে হংকং সমস্যাকেও বিশ্ব রাজনীতির আলোচনায় সামনে নিয়ে এসেছে অ্যামেরিকা। করোনার জন্যও চীনকে দায়ী করেছে। এ বার ভারতের পাশে দাঁড়িয়েও চীনকে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে ট্রাম্প প্রশাসন।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এনডিটিভি)