‘চীনে মুসলিম সংখ্যালঘুরা রাজনৈতিক অনুশাসনের কবলে'
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮সোমবার মানবাধিকার সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন শিবিরে আটক উইগুর ও অন্যান্য মুসলমিদের ইসলামী রীতিতে পরস্পরকে সম্ভাষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তাঁদের বাধ্যতামূলকভাবে মান্দারিন ভাষা শিখতে হচ্ছে এবং কর্তৃপক্ষের ঠিক করে দেওয়া গান গাইতে হচ্ছে৷
বন্দি শিবিরে কাটিয়ে আসা পাঁচজনের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এইচআরডাব্লিউ৷
প্রতিবেদনে বলা হয়, কাজাখস্তান, তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়ার মতো ২৬টি ‘স্পর্শকাতর' দেশে আত্মীয়-স্বজন থাকা উইগুরদের ‘টার্গেট' করছে কর্তৃপক্ষ৷ তাদের আটকের পর কোনো আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই বেশ কয়েক মাস বন্দি করে রাখা হচ্ছে৷
বন্দি শিবিরে নির্দেশনা না মানলে খেতে না দেওয়া, ২৪ ঘণ্টার মতো দাঁড় করিয়ে রাখা এবং একাকী নির্জন কারাবাসের মতো শাস্তি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে৷
স্বায়ত্তশাসিত উইগুর অঞ্চলে ‘ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ' ও কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি আনুগত্য আনতে লাখ লাখ উইগুর মুসলিমকে ‘রাজনৈতিক শিবিরে' জোর করে আটকে রাখা হয়েছে বলে গত আগস্টে অভিযোগ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্যানেল৷
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে বেইজিং৷ তারা বলছে, এসব ক্যাম্পে ‘রাজনৈতিক শিক্ষা' দেওয়া হয় না, বরং, এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সোশ্যাল মোবিলিটি বৃদ্ধিতে সরকারের উদ্যোগের অংশ হিসেবে তাঁদের কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্র চালু করা হয়েছে৷
শিনচিয়াংকে ইসলামপন্থি উগ্রবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হুমকি মোকাবেলা করতে হচ্ছে বলে চীনের দাবি৷ তাদের ভাষ্যমতে, ওই অঞ্চলে টার্কিক ভাষাভাষী উইগুর এবং হান চীনা সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির লক্ষ্যে অনেকবার হামলা চালানো হয়েছে৷
শিনচিয়াংয়ের সাবেক বাসিন্দা এবং বর্তমানে বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত ৫৮ জনের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে হংকংভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গবেষক মায়া ওয়াং বলেন, শিনশিয়াংয়ে বন্দি শিবিরের বাইরে এখনো কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷
তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, আধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত তল্লাশি চৌকি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হয়েছে৷ এখানে ফেসিয়াল রেকগনিশন প্রযুক্তি এবং বাড়ি ধরে ধরে কিউআর কোড দিয়ে তার মাধ্যমে পুলিশের তদারকি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷
এএইচ/এসিবি (রয়টার্স)