‘চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়ানো প্রায় অসম্ভব’
২ এপ্রিল ২০১৯সোমবারও ব্রেক্সিট চুক্তির কোনো বিকল্প সম্পর্কে ঐকমত্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হলো ব্রিটেনের সংসদ৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের শুল্ক কাঠামোয় স্থায়ীভাবে থেকে যাবার একটি প্রস্তাব সবচেয়ে বেশি সমর্থন পেয়েছে, যদিও মাত্র চারটি ভোট কম পাওয়া সেটি অনুমোদন পায়নি৷ নরওয়ের সঙ্গে ইইউ-র সম্পর্ককে মডেল হিসেবে বেছে নেবার প্রস্তাবও ব্যর্থ হয়েছে৷ ব্রেক্সিটের প্রশ্নে দ্বিতীয় গণভোটের প্রস্তাবও গ্রহণ করেননি সংসদ সদস্যরা৷ তাঁদের মধ্যে অনেকেই নিজস্ব দলের অবস্থানের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন৷ ফলে সংসদে অচলাবস্থা আবার স্পষ্ট হয়ে উঠলো৷ বিরোধী পক্ষ এখনো ব্রেক্সিট চুক্তির বিকল্প খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যেতে চায়৷ বুধবার আরও ‘ইন্টিকেটিভ ভোট'-এর মাধ্যমে কোনো একটি প্রস্তাবের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের চেষ্টা করবে তারা৷
সোমবারের ভোটাভুটির ফলে আপাতত মোটামুটি তিনটি সম্ভাবনাই অবশিষ্ট রইলো৷ নির্দিষ্ট তারিখেই ব্রেক্সিট কার্যকর করতে চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট কার্যকর করা যেতে পারে৷ কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র উপর সেই পথ বেছে নিতে চাপ দিচ্ছেন৷ প্রধানমন্ত্রী চতুর্থবারের মতো সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদনের চেষ্টা চালাতে পারেন৷ তবে তার জন্য স্পিকারের সম্মতি ও প্রয়োজনীয় ঐকমত্য অর্জন করা প্রয়োজন৷ সেই প্রচেষ্টায় আবার ব্যর্থ হলে মে ইইউ-র কাছে দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে ব্রেক্সিট মূলতুবি রাখার আবেদন জানাতে পারেন৷ সে ক্ষেত্রে ব্রিটেনকে আসন্ন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে হবে৷
প্রধানমন্ত্রী যে বিকল্পই বেছে নিন না কেন, তাঁর মন্ত্রিসভা, সরকার ও দলে ভাঙন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ সোমবারই সংসদে ‘নরওয়ে প্লাস' মডেলের প্রস্তাব ব্যর্থ হওয়ার পর প্রস্তাবের উদ্যোক্তা ও মন্ত্রিসভার সদস্য নিক বোলস তাঁর পদত্যাগ ঘোষণা করেন৷ সেই পদক্ষেপের জন্য তিনি নিজের দলকে দায়ী করেন৷ ব্রেক্সিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী স্টিফেন বার্কলে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার দীর্ঘ বৈঠকে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে আলোচনা হবে৷ তবে তাঁর মতে, অন্য কোনো বিকল্প না পাওয়া গেলে ১১ দিন পর ব্রিটেন চুক্তি ছাড়াই ইইউ ত্যাগ করবে৷
ইউরোপেও চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের আশঙ্কা বাড়ছে৷ ইইউ পার্লামেন্টের ব্রেক্সিট সমন্বয়ক গি ফ্যারহোফস্টাট বলেন, সোমবার ব্রিটিশ সংসদে ভোটাভুটির পর চুক্তিহীন ব্রেক্সিট প্রায় অনিবার্য হয়ে উঠলো৷ বুধবার ব্রিটিশ সংসদ সেই পরিস্থিতি এড়াতে শেষ সুযোগ পাবে বলে তিনি মনে করেন৷
আগামী ১২ই এপ্রিলের মধ্যে কোনো বিষয়ে ঐকমত্য অর্জন করতে না পারলে সত্যি চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট এড়ানো সম্ভব হবে না৷ ১০ই এপ্রিল জরুরি ভিত্তিতে এক ইইউ শীর্ষ সম্মেলন ডাকা হয়েছে৷ সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ধরে নেওয়া হয়েছে৷
এসবি/জেডএইচ (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)