1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চুক্তি ছাড়াই শেষ হলো জলবায়ু সম্মেলন

২০ ডিসেম্বর ২০০৯

১১০ টিরও বেশি দেশ থেকে রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকার প্রধানগণ অংশ নিয়েছিলেন দুই সপ্তাহের কোপেনহেগেন জলবায়ু সম্মেলনে৷ তবে অব্যাহত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বিশ্ব নেতারা জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কোন চুক্তিতে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/L986
কোপেনহেগেন সম্মেলনের শেষ দিনে বান কি-মুনছবি: AP

২০ ঘন্টা পর সমাপনী

মধ্য ইউরোপের স্থানীয় সময় অনুযায়ী শনিবার বিকেল ৩ টা ২৬ মিনিটে আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটল কোপেনহেগেন সম্মেলনের৷ পূর্ব নির্ধারিত সময়ের প্রায় ২০ ঘন্টা পর সমাপনী হলো আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের৷ সম্মেলনের উপ-প্রধান সলোমন দ্বীপপুঞ্জের কলিন বেক ঘোষণা করলেন, ''সম্মেলন এখানেই সমাপ্ত৷'' তবে সভাস্থলের পেছনের সারিতে তখনও চলছে প্রতিনিধিদের গুঞ্জন৷ আগের রাত এবং দিনভর আলোচনার পরও শেষ হচ্ছে না এই বহুল আলোচিত সম্মেলনের পাওয়া-না-পাওয়ার হিসাব৷

তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি

অধিকাংশেরই অভিমত, এই সম্মেলন থেকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি৷ শনিবার ২৫ দেশের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন, দু'একটি বিষয়ে ঐকমত্য হলেও গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসে মধ্যম কিংবা দীর্ঘ মেয়াদি কোন লক্ষ্যমাত্রা গৃহীত হয়নি৷ ২০২০ সাল থেকে গরিব দেশগুলো বার্ষিক জলবায়ু সহায়তা হিসেবে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার করে পাবে এমন ঘোষণা দেওয়া হলেও সেই তহবিল কোথা থেকে আসবে তা বলা সম্ভব হয়নি কোপেনহেগেনে৷

উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রতিবাদ

আনুষ্ঠানিক সমাপনী অধিবেশনে যখন এই ঘোষণা উপস্থাপন করা হয় তখন প্রতিবাদ জানান দ্বীপ রাষ্ট্র টুভ্যালুর প্রতিনিধি ইয়ান ফ্রাই৷ তিনি বলেন, ''এটা যেন বাইবেলের সেই উদাহরণ যে, আমাদের সামনে ৩০টি রৌপ্য মুদ্রা উপস্থাপন করা হচ্ছে৷ আর তার বিনিময়ে যেন আমরা আমাদের দেশ এবং জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করি৷ কিন্তু আমাদের ভবিষ্যৎ বিক্রির জন্য নয় এবং টুভ্যালু এই দলিল গ্রহণ করতে পারে না৷'' টুভ্যালুর সাথে প্রায় একই সুরে প্রতিবাদ জানিয়েছে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশ৷ এগুলোর মধ্যে বিশেষ করে ল্যাটিন আমেরিকার বামপন্থি দেশ ভেনেজুয়েলা, বলিভিয়া, নিকারাগুয়া এবং কিউবা উল্লেখযোগ্য৷ প্রসঙ্গত, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে সর্বপ্রথম টুভ্যালু পানির নিচে তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷

Flash-Galerie Luiz Inacio Lula da Silva Greenpeace UN-Klimakonferenz in Kopenhagen
পরিবেশবাদীদের বিলবোর্ডে ব্রাজিলীয় নেতা লুই ইনাসিও লুলা ডা সিলভাছবি: AP

সান্ত্বনার বাণী বান কি-মুনের

তবে সমাপনী অধিবেশনে কিছুটা সান্ত্বনা বাণী শোনা যায় জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের কণ্ঠে৷ তাঁর মতে, শেষ পর্যন্ত কমপক্ষে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছা সম্ভব হয়েছে৷ আর এটা কেবলই শুরু৷ তিনি বলেন, ''এই দলিলকে একটি শক্ত বন্ধনের চুক্তিতে পরিণত করতে হবে৷ আগামী মাসগুলোতে আমি বিশ্ব নেতাদের সাথে এই উদ্দেশ্যে কাজ করবো৷ ফলে আমরা একটি সফলতায় পৌঁছতে সক্ষম হবো৷''

এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ম্যার্কেলের

এদিকে, কোপেনহেগেনে জলবায়ু বিষয়ে যে সমঝোতা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তা এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করার প্রত্যয় শোনালেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ তিনি বলেন, ''এখানে সমঝোতা প্রকৃতপক্ষেই বেশ কঠিন ছিল৷ আর এর ফলাফল নিয়ে আমার রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া৷ আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হতো যে, আমরা এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখবো নাকি এখানেই থামিয়ে দেব৷ অবশেষে এটিই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, যদি আমরা এখানেই থেমে যাই, তবে আরো কিছু বছর হারিয়ে যাবে৷ তাই আমরা এক্ষেত্রে সম্মত হয়েছি যে, এই প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখতে হবে৷''

প্রতিবেদন: ইয়োহানেজ বেক, ভাষান্তর: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম