ছন্দে ফিরছে ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ
৫ অক্টোবর ২০২১ভারতীয় সময় সোমবার রাতে (জিএমটি বিকেল চারটে) আচমকাই অকেজো হয়ে যায় ফেসবুকের তিনটি সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট ফেসবুক, হোয়াটস্যাপ এবং ইনস্টাগ্রাম। গোটা পৃথিবীর প্রায় তিন দশমিক পাঁচ বিলিয়ন নেটিজেন যার জেরে প্রবল সমস্যায় পড়েন। ভারতীয় সময় ভোররাতে ফের ধীরে ধীরে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ কাজ করতে শুরু করে। তবে ব্যবহারকারীদের বক্তব্য এখনো পুরোপুরি ছন্দে ফেরেনি সাইট দুইটি।
কী ঘটেছিল
ঠিক কীভাবে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বিকল হয়ে গেল, তা নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। তবে অ্যাপগুলি অকেজো হওয়ার পরে তারা ব্যবহারকারীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। হোয়াটসঅ্যাপে তারা মেসেজ পাঠিয়ে বলেছেন, কারিগরী সমস্যার কারণে অ্যাপগুলি বিকল হয়েছে। দ্রুত তা আবার কাজ করতে শুরু করবে।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষেরই অংশ হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রাম। এর আগেও একবার এভাবেই বসে গিয়েছিল তাদের প্ল্যাটফর্ম। কিন্তু দ্রুত তা ছন্দে ফিরে এসেছিল। এবারের ঘটনা ঐতিহাসিক। কর্তৃপক্ষ কোনো বয়ান না দিলেও, ফেসবুকের কর্মীরা নাম প্রকাশ করা যাবে না এই শর্তে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ ভুলের জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে। ডোমেনে ভুল হওয়ার জন্যই গোটা সার্ভার ক্র্যাশ করেছে। কেউ কেউ বলছেন, রাউটিং সিস্টেমের গোলমাল থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজ করা হয়েছে কি না, তা এখনো জানা যায়নি। ঘটনার পরে ফেসবুকের কারিগরী প্রধান এই মেসেজ পাঠিয়েছেন।
ঘটনার পরে শেয়ারবাজারে ফেসবুকের দর পড়ে যায়। প্রতিদিন ফেসবুক ব্যবহার করেন প্রায় দুই বিলিয়ন মানুষ। সোমবার রাতে সেই ব্যবহারও আচমকা চার দশমিক নয় শতাংশ নেমে যায়। এর ফলে ফেসবুকের বিপুল ক্ষতি হয়েছে বলেও দাবি বিশেষজ্ঞদের। প্রতি ঘণ্টায় ফেসবুকের আয় পাঁচ লাখ ৪৫ হাজার ডলার। ছয় ঘণ্টায় তাদের বিপুল ক্ষতি হয়েছে।
তবে কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হার্ভার্ডের বার্কম্যান ক্লেইন সেন্টার ফর ইন্টারনেট অ্যান্ড সোসাইটির ডিরেক্টর জোনাথান জিট্রেইন বলেছেন, ''গাড়ির ভিতর চাবি রেখে গাড়ি বাইরে থেকে লক করে দিলে যা হয়, ফেসবুকের সার্ভারেও তাই হয়েছে।''
অন্যায়ের সঙ্গে সমঝোতা
রোববার রাত থেকেই ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ বিড়ম্বনার মধ্যে। ফেসবুক সংস্থাকে ঘনিষ্ঠভাবে চেনেন বলে দাবি করে এক ব্যক্তি রোববার রাতে একটি টেলিভিশন শো-তে অংশ নেন। সেখানে তিনি বলেন, একেবারে গোড়ার দিকে ফেসবুক বুঝেছিল যে, তাদের প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে হেটস্পিচ ছড়ানো হবে। ভুল তথ্য ছড়ানো হবে। কিন্তু শুধুমাত্র লাভের আশায় সেই বিষয়গুলিকে তখন আমল দেওয়া হয়নি। আজ তার ফল ভুগছে গোটা সমাজ।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)