জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কমিক-সুপারহিরো
কমিক-সুপারহিরোর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা তুলে ধরে পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছেন জাম্বিয়ার কার্টুনিস্ট এমভেভা মুজোনকো৷ তাঁর ব্যঙ্গাত্মক সৃষ্টিকর্ম নিয়ে বইও বেরিয়েছে৷
জলবায়ু পরিবর্তন: কক্ষে হাতি
ফোরসাইট কমিকসের প্রতিষ্ঠাতা মুজোনোকো জার্মানির জ্বালানি রূপান্তর নিয়েও কার্টুন এঁকেছেন৷ জলবায়ু পরিবর্তনকে বৃহদাকার এক হাতির মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন, এঁকে উপেক্ষা করে জার্মানি ও ইউরোপে যে অভিবাসন হচ্ছে, তার ওপর আলোকপাত করেছেন তিনি৷ ইন্টারন্যাশনাল জার্নালিস্টস প্রোগ্রামে অংশ নিতে জার্মানিতে এসেছিলেন এই কার্টুনিস্ট৷
জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী হিসেবে গরু
এই কার্টুনে মাংস ও ডেইরি খাত কীভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে তা তুলে ধরা হয়েছে৷ ইনস্টিটিউট ফর এগ্রিকালচার অ্যান্ড ট্রেড পলিসি অ্যান্ড গ্রেইনের এক প্রতিবেদনে ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের কার্বন বাজেটের প্রায় ৮০ শতাংশ লাইভস্টক খাতের পেছনে চলে যাওয়ার আভাস দেওয়ার প্রেক্ষাপটে তিনি এটা একেঁছেন৷
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব
জার্মানরা জীবাশ্ম থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যাওয়ার পক্ষে থাকলেও এতে কী পরিমাণ ব্যয় হবে, সে বিষয়ে তারা ততেটা আগ্রহী নন৷ একটি সমীক্ষায় উঠে আসা এই তথ্য ঘিরেই কার্টুনটি আঁকা হয়েছে৷
পেট্রোলকে বিদায় বলতে নারাজ
সরকার চার হাজার ইউরোর প্রলোভন দেখালেও পেট্রোল ও ডিজেল চালিত গাড়ি ছেড়ে বৈদ্যুতিক গাড়ি নিতে রাজি নন অধিকাংশ জার্মান৷ এই বিষয়টিই তিনি তুলে ধরেছেন এখানে৷
‘মহাকাশ থেকে দেখা যায়’ জার্মানির কয়লা খনি
জাম্বিয়ার কার্টুনিস্টের ব্যঙ্গ থেকে ছাড় পায়নি জার্মানির কয়লা খনি৷ উন্মুক্ত কয়লা খনি থেকে আসা নিম্নমানের বাদামি কালচে কয়লা পুড়িয়ে ২০১৭ সালে জার্মানির মোট বিদ্যুতের ২৩ শতাংশ উৎপাদিত হয়৷ এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রই ইউরোপের সবচেয়ে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড উদগীরণকারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর তালিকায় সবচেয়ে উপরের দিকে রয়েছে৷
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সুপারহিরো কমিক বই
এমভেভা মুজোনকো ২০১৮ সালে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে কমিক বইয়ের সিরিজ নিয়ে আসেন৷ বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে লড়াইরত একটি চরিত্রকে সুপারহিরো হিসেবে চিত্রিত করেন৷ জাম্বিয়ার সুপার হিরো, দশম গ্রেডের ছাত্রী কুইন এন্স তার এই যাত্রায় নানা রোমাঞ্চকর ঘটনাবলীর জন্ম দিয়ে চলে৷
কমিকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছানো
পড়ার প্রতি আগ্রহের ঘাটতি রয়েছে জাম্বিয়ায়৷ সেখানে শিশু-কিশোরদের মধ্যে দৃষ্টিনন্দন কমিকের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি হবে বলে প্রত্যাশা করেন শিল্পী৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি জাম্বিয়ার যেখান থেকে এসেছি, সেখানে পড়ার অভ্যাস প্রকৃতঅর্থে খুবই খারাপ৷ তাই আপনি যদি ছবিসহ একটি বই কাউকে দেন, তাহলে তাদের আগ্রহ তৈরি হবে বলে আমার মনে হয়৷’’
বিশ্বকে রক্ষায় বীরাঙ্গনা
সুপারহিরো হিসেবে একটি মেয়েকে বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে এমভেভা বলেন, ভিন্নতা আনবে ভেবেই তিনি এটা করেছেন৷ ‘‘আপনি আমার কমিক বই দেখলে দেখবেন, চরিত্রটি পরিপূর্ণ নয়৷ তার জীবন দুর্বিষহ এবং সে-সবের পরও সে বিশ্বকে বাঁচাতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়ছে৷’’