জার্মানিতে আশ্রয়প্রার্থী সংক্রান্ত নীতি কড়া করার উদ্যোগ
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪জোলিঙেনের ঘটনার পর থেকে জার্মানির রাজনৈতিক জগতে রাজনৈতিক আশ্রয় ও নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে৷ সেই সঙ্গে গত রোববার পূবের দুটি রাজ্যে নির্বাচনে মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলির খারাপ ফলাফল অবৈধ অনুপ্রবেশ, আশ্রয়ের আবেদন নাকচ হওয়ার পর বিদেশিদের প্রত্যর্পণ, অপরাধ দমনে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার তাগিদ আরো বেড়ে গেছে৷ মঙ্গলবার জার্মানির জোট সরকারের তিন শরিক দল ও প্রধান বিরোধী ইউনিয়ন শিবিরের দুই দল প্রথম বারের মতো সে বিষয়ে আলোচনা করেছে৷
গত সপ্তাহে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সরকার প্রস্তাবিত পদক্ষেপের এক খসড়া প্রকাশ করেছিল৷ তার ভিত্তিতেই মঙ্গলবার প্রাথমিক আলোচনা হলো৷ সরকার ও বিরোধী প্রতিনিধিরা সে বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য না করলেও এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে বর্ণনা করেছেন৷ আগামী কয়েক দিনে আরো কয়েক দফা আলোচনা হবার কথা৷ জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার বলেন, প্রথম বৈঠকে দুই পক্ষের মধ্যে সুনির্দিষ্ট, খোলামেলা ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে৷ এবার কয়েকটি বিষয়ের আইনি দিকগুলি পরীক্ষা করতে হবে৷ আপাতত আলোচনার বিষয়গুলি গোপনীয় রাখার সিদ্ধান্তের কথাও তিনি বলেন৷
শলৎসের সরকার বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপের প্রস্তাব রেখেছে৷ বিরোধী ইউনিয়ন শিবির সেইসঙ্গে জার্মানিতে বিদেশিদের প্রবেশের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমানোর উপরও জোর দিচ্ছে৷ তাদের মতে, অভিবাসন ও সমাজের মূল স্রোতে বিদেশিদের সম্পৃক্ত করার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে হলে কর্তৃপক্ষের ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করলে চলবে না৷ সীমান্তে আরো কড়া নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সেখান থেকে বিদেশিদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থাও করতে হবে৷ সিডিইউ দলের শীর্ষ নেতা ফ্রিডরিশ ম্যারৎস বলেছেন, অনিয়ন্ত্রিত অভিবাসনই মূল ইস্যু৷ তবে জাতীয় ও ইউরোপীয় আইন লঙ্ঘন না করে বাস্তবে কতটা কড়া পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাধারণ বিধিনিয়ম নিয়ে জার্মানির রাজনৈতিক মহলে সংশয় বাড়ছে৷ বিশেষ করে ডাবলিন চুক্তি সত্ত্বেও অন্য দেশে নথিভূক্ত আশ্রয়প্রার্থীরাও জার্মানিতে থেকে গিয়ে যেভাবে প্রত্যর্পণ এড়াতে পারছে, সেই প্রেক্ষাপটে জাতীয় স্তরে আরো কড়া নিয়মের দাবি বাড়ছে৷ মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের ক্ষোভের মুখে দলীয় রাজনীতির ঊর্দ্ধে উঠে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ অনুভব করছে৷ সাম্প্রতিক নির্বাচনে পপুলিস্ট দলগুলির অভাবনীয় সাফল্য তাদের গভীর দুশ্চিন্তায় ফেলছে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)